বাংলাহান্ট ডেস্কঃ কেরালার (Kerala) এক ব্যক্তি প্রায় ১৫ বছর স্থাপত্যবিদ হিসাবে কাজ করার পরে, এল্ডো পাচিলাকদন তাঁর চাকরি ছেড়ে প্রকৃতির চারপাশে থাকা সহজ জীবনযাত্রায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই ৪২ বছর বয়সী এল্ডো পাচিলাকদন কেরালার কোট্টায়ামের বাসিন্দা।
ইদুক্কির সেনাপতি নামে একটি জায়গার ১০ একর বন্ধ্যা জমি কেনেন। এবং সেখানে ফল এবং সবজি চাষের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেন। কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যাবসায়ের পর মাত্র তিন বছরের মধ্যে তিনি ট্রেকিং এবং অফ-রোডিংয়ের অভিজ্ঞতাও উপস্থাপন করেন, যাকে তিনি ‘স্বর্গা মেদু (স্বর্গীয় বাসস্থান)’ হিসাবে নামকরণ করেছেন।
অ্যাডুর সরকারী পলিটেকনিক কলেজ থেকে আর্কিটেকচারে স্নাতক ডিগ্রি শেষ করেন। তারপর তিনি একটি ফার্মে চাকরি করার পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে চাকরি করেছিলেন। রেস্তোঁরাগুলির মালিকানা থেকে টেক্সটাইলের দোকান এমনকি আর্ট গ্যালারী পর্যন্ত – তিনি সবকিছু করেছেন। তিনি একটি এনজিওর অংশ ছিল যেখানে, তিনি এবং তার বন্ধুরা সরকারের বনসেবার জন্য স্বেচ্ছাসেবী কাজ করতেন। ভ্রমণ পিয়াসী এবং প্রকৃতিপূজারী হওয়ার দরুণ তিনি নিজে কিছু করতে চেয়েছিলেন।
তিনি জানান, “ইদুক্কিতে একটি ট্রেক চলাকালীনই আমরা এই জমির প্লটটি পেরিয়ে এসেছি এবং সাথে সাথে আমি এর সাথে কিছুটা সংযোগ অনুভব করেছি। এটি বন্ধ্যা ছিল, এবং আমি ভাবছিলাম যে আমি এর পরিবর্তনে কিছু ভূমিকা নিতে পারি কিনা। সেইমতো ২০০৯ সালে আমার বন্ধু বিবেক ভিলাসনির সাথে জমিটি কিনে একটি ‘পৃথিবীতে স্বর্গ’ তৈরি করতে চেয়েছিলাম। ধারণা ছিল প্রকৃতির কাছাকাছি একটি স্বনির্ভরশীল ইকোসিস্টেম তৈরি করা। পদ্ধতিগত কৌশল এবং ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতি না ব্যবহার করে, আমরা কেবল প্রাকৃতিকভাবে চারাগুলোকে বেড়ে উঠতে দিই’।
প্রায় ২০ রকমের আপেল, ৬ থেকে ৭ প্রকার কমলা লেবু, আঙ্গুর ফল, লিচু, স্ট্র্যবেরি এবং আম গাছ ছাড়াও আরও অনেক গাছ রয়েছে তাঁদের জমিতে। তিনি জানান, ‘“তবে এই চারা পাওয়া সহজ ছিল না। কেরলের মাটি এবং জলবায়ু পরিস্থিতির সঙ্গে মানানসই উদ্ভিদ আমি সারা পৃথিবী জুড়ে খুঁজে বেরিয়েছি। আমি গাছগুলির পুষ্টির জন্য অন্য কিছু যুক্ত করি না কারণ আমি বিশ্বাস করি প্রকৃতির নিজস্ব রক্ষণাবেক্ষণের উপায় রয়েছে। মানুষ হিসাবে, আমরা কেবল বীজ বপন করার জন্য সেখানে রয়েছি এবং আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের প্রকৃতির চক্রকে ব্যাহতকারী হওয়া উচিত নয়’।
ফলের বন ছাড়াও, এলদহো পর্যটক এবং অন্যান্য কৃষি বিশেষজ্ঞদের জন্য ‘স্বর্গা মেদু’ খোলার ব্যবস্থাও করেছে। যদিও বনাঞ্চলে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা নেই তবে তারা তাঁবু সরবরাহ করে এবং রাতারাতি ক্যাম্পে স্বাগত জানায়, পাহাড়ের চূড়া দিয়ে ট্রেক করার ব্যবস্থাও করে দেয়। প্রায় তিন বছর ধরেব তারা ওই বনের ফল খেয়েই কাটিয়ে দিয়েছে। স্ত্রী বিনসি এবং তাঁর দুই সন্তান পুরোপুরি এই জীবনযাত্রাকে গ্রহণ করতে না পারলেও, এই কাজে তারা তাঁর পাশে আছে।
‘মৃত্যুকুম্ভ’ মন্তব্যের পর তীব্র কটাক্ষ! এবার মমতার সন্দেহ ‘১৪৪ বছর’ পর মহাকুম্ভ নিয়ে