বাংলাহান্ট ডেস্ক : বনধ্ ঢেকেছেন বাস ও গাড়ি চালকরা। অথচ বনধ্ হওয়ার জন্য তো আর বিয়ে বন্ধ হতে পারে না। তাই, এক কিলোমিটার বা দু কিলোমিটার নয়, টানা ২৮ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বিয়ের আসরে পৌঁছলেন বর। শুনে অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই? ভাবছেন এমনটা আবার হয় নাকি? এমন আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটে গিয়েছে ওড়িশার (Odisha) দিবালাপাডু গ্রামে।
গত বৃহস্পতিবার দিন বিয়ের তারিখেই এমন বিপত্তি হওয়ার হবু বরকে ‘পায়ে হেঁটে বিয়ে করতে যাওয়ার’ মত এমন অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে রায়গড় জেলার সুনাখান্ডি গ্রামের বাসিন্দা নরেশ প্রসকার সঙ্গে দিবালাপাডু গ্রামের বাসিন্দা এক মহিলার বিয়ে ঠিক হয়। ফলে, বিয়ে (Marriage) করতে যাওয়ার জন্য বরযাত্রীর তরফে বেশ কয়েকটা গাড়ি ভাড়ার ব্যবস্থাও করা হয়।
কিন্তু, বিয়ের দিন গাড়িচালকরা তাদের নিজস্ব দাবিদাওয়া নিয়ে ধর্মঘট শুরু করলে বিপাকে পড়েন হবু বর সহ বরের বাড়ির লোকজন। অগত্যা, ৩০ জন সদস্য নিয়ে কনে বাড়ির উদ্দশ্যে রওনা দেন পাত্র নরেশ। টানা ২৮ কিমি হাঁটার পর রাত তিনটে সময় বরযাত্রী হাজির হয়। তবে, বরের বাড়ির লোকজনদের আসতে প্রচুর দেরি হওয়ায় রীতিমতো চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন কনেপক্ষ।
সূত্রের খবর, বরযাত্রী তালিকায় আটজন মহিলাও ছিলেন। তবে, তার আগে একটি দু’চাকার গাড়িতে করে বিয়ের প্রয়োজনীয় সামগ্রি কনের বাড়ি থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এদিকে, দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে আসার জন্য ক্লান্তও ছিলেন বর ও বরযাত্রীরা। ফলে, বিয়ের পর্ব শেষ করতে করতে পরের দিন দুপুর গড়িয়ে যায়। বলা বাহুল্য, বিয়ের পর্ব মেটার সঙ্গে সঙ্গে যেন হাঁফ ছেড়েছেন বরও।
বিয়ে পর্ব মিটে যাওয়ার পর কনের এক আত্মীয় বলেন, ‘আমরা আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। দীর্ঘ পথ হাঁটার সঙ্গে পরিচিত। আগে এভাবে হেঁটেই বিয়ে করতে যাওয়া হত। বর্তমানে গাড়ির প্রচলন শুরু হওয়ায়, হেঁটে আর কেউ বিয়ে করতে যায় না’। তবে, এই ঘটনা যেন বরের জীবনের এক লাইফটাইম এক্সপেরিয়েন্স। তবে, প্রথমে লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হলেও সেটি প্রত্যাহার করায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে বরপক্ষও।