বাংলা হান্ট ডেস্ক : শুরু হয়ে গিয়েছে দুর্গা পুজো (Durga Puja)। এই মুহূর্তে আমাদের দেশের নানা প্রান্তে রয়েছে উৎসবের (Durga Puja) মেজাজ। ভারতবর্ষ মানে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। ধর্ম নিরপেক্ষ এই দেশে বিভিন্ন জাতি-ধর্ম-সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। তাই এদেশের এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে পা বাড়ালেই বদলে যায় সেখানকার মানুষের ভাষা সংস্কৃতি পোশাক-আশাক।
দুর্গা পুজো (Durga Puja) করেন মুসলিম পুরোহিত
বাংলায় যেমন দুর্গা পুজোর (Durga Puja) শুরু হয়ে গিয়েছে তেমনি বাংলার বাইরে চল রয়েছে নবরাত্রির। দুর্গা পুজোর (Durga Puja) মতোই নবরাত্রিতেও দেবী দশ ভুজারই পুজো করা হয়। তবে এক্ষেত্রে উৎসবের দিন সংখ্যা অনেক বেশি। তাই জাঁকজমকও আলাদা। তবে জানলে অবাক হবেন আমাদের দেশে এমন এক মন্দির রয়েছে যেখানে মা দুর্গার পুজোর দায়িত্ব সামলান একজন মুসলিম ব্যক্তি।
তার নাম জালালউদ্দিন খান। দীর্ঘ ৬০০ বছরের পুরনো এই দুর্গা মন্দিরে বংশ পরম্পরায় পুজো পাঠের দায়িত্ব সামলে চলেছেন এই মুসলিম ব্যক্তি। ধর্মবিশ্বাস আলাদা হওয়ায় মসজিদে নামাজ পাঠ করেন তিনি। তবে নিজস্ব ধর্ম পালন করলেও এই দুর্গা মন্দিরের পুজোয় কোনো খামতি রাখেন না জালালউদ্দিন। কিন্তু প্রশ্ন হল একজন মুসলিম হয়েও তিনি কিভাবে এই মন্দিরের পুজোর দায়িত্ব পেলেন?
আসলে এর পিছনে রয়েছে এক বহু পুরনো কাহিনী। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা থেকে জানা যায়, জালালুদ্দিনের পূর্ব পুরুষরা ছিলেন সিন্ধ প্রদেশের আদি বাসিন্দা। ব্যবসার কাজেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে বেড়াতেন তাঁরা। তবে দেশ ভাগের পর তাঁরা পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যবসার খাতিরেই আবার প্রায় পুরো পরিবার নিয়ে ভারতে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন জালালউদ্দিন। কিন্তু রাজস্থানে এসেই জালালুদ্দিনের পূর্ব পুরুষদের অনেকেই ভয়ানক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এমন অবস্থা হয়েছিল যে বাঁচার আশাটুকুও ছিল না কারও।
আরও পড়ুন : পুজোর ক’টা দিনে উঠুক ছবির ঝড়! অংশগ্রহণ করুন বাংলা হান্ট-এর সেলফি কনটেস্টে, মিলবে দুর্দান্ত উপহার
তখন তাঁরা সকলে আশ্রয় নিয়েছিলেন এই জাগ্রত দুর্গামন্দিরে। তখনই ঘটে যায় এক আদ্ভুত ঘটনা। মন্দিরে আশ্রয় নিয়েই ধীরে ধীরে সুস্থ হতে শুরু করেন তাঁরা। সেই দেখেই সকলে ভেবে নেন এ নিশ্চয়ই দৈবিক ঘটনা। তখন থেকেই জালালুদ্দিনের পূর্বপুরুষরা এই মন্দিরের সমস্ত দায়িত্ব একা হাতে সামলান।
ওই পরিবারের ১৩ তম প্রজন্ম হিসাবে সেই ধারা এখনও বজায় রেখেছেন জালালুদ্দিন। জালাউদ্দিনকে দেখেও বোঝা যায় না, তিনি হিন্দু নাকি মুসলিম! কারণ হিন্দুদের মতোই হাতে লালসুতো মাথায় তিলক কেটে দেবী মায়ের পুজোয় বসেন তিনি। স্পষ্ট মন্ত্র উচারণে সমস্ত নিয়ম মেনেই নিষ্ঠা ভরে করেন পুজো। পূর্ব পুরুষের শেখানো নিয়ম মেনেই আজও দেবী দুর্গার আরাধনা করেন রাজস্থানের এই মুসলিম ব্যক্তি।