বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিগত বছরগুলিতে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চিন (China) ক্রমশ তার সক্রিয়তা বৃদ্ধি করছে। এমতাবস্থায়, চিনকে রুখতে বড়সড় পরিকল্পনা গ্রহণ করছে ভারতীয় সেনা (Indian Army)। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ভারতীয় সেনা আরও একটি ডিভিশন তৈরির কথা ভাবছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শীর্ষ সেনা কর্তাদের একাংশ এই বিষয়ে কিছু তথ্য জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই প্যাংগং হ্রদের ওই পারে চিনা সেনার ওয়াটার স্কোয়াড্রন ডিভিশনের মহড়া পরিলক্ষিত হয়েছে। তাই, সামগ্রিক পরিস্থিতিকে বিবেচনা করে পাল্টা কৌশলী পদক্ষেপ হিসেবে নতুন ডিভিশন তৈরির বিষয়টি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, প্যাংগং হ্রদের দৈর্ঘ্য হল ১৩৪ কিলোমিটার। যেটি পূর্ব লাদাখ ও পশ্চিম তিব্বতের মধ্যে বিস্তৃত। এদিকে, ২০২০ সালের মে মাসে গলওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর থেকেই ভারত ও চিনের মধ্যে পূর্ব লাদাখে উত্তেজনার রেশ অব্যাহত রয়েছে। তবে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত এবং চিন প্যাংগংয়ের উত্তর এবং দক্ষিণ অংশে সেনা সক্রিয়তার ক্ষেত্রে কিছুটা রাশ টানলেও মোতায়েন থাকা বাহিনীর বহর কিন্তু কমেনি।
এমতাবস্থায়, উভয় দিকেই বর্তমানে ৫০ থেকে ৬০ হাজার সেনা রয়েছে। জানা গিয়েছে যে, চিন ৯২৮ বি শ্রেণির হানাদার নৌকা মোতায়েন করে রেখেছে। পাশাপাশি, ওই নৌকা দিয়েই চালানো হচ্ছে ওই অঞ্চলে বাহিনী সংগঠিত করার কাজ। খবর অনুযায়ী, ওই ওয়াটার স্কোয়াড্রনে ২০ টির বেশি নৌকা এবং ২০০ সেনা রয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, চিনা সেনার ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের তরফে মোট ৩,৪৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার নিরাপত্তার বিষয়টিতে নজর রাখা হয়। এমন পরিস্থিতিতে, সেনা আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন যে, ওই কমান্ডের ওয়েস্ট সি ফ্লিটের একটি অংশ হল এই ওয়াটার স্কোয়াড্রন।
আরও পড়ুন: রিঙ্কু-পরাগ অতীত, এবার BCCI খোঁজ পেল টিম ইন্ডিয়ার নয়া ফিনিশারের, T20 বিশ্বকাপে উঠবে ঝড়
এদিকে সূত্রে খবর অনুযায়ী, চিনের এই আগ্রাসী মনোভাবের জেরেই সামগ্রিকভাবে নিরাপত্তার দিকটি মাথায় রেখে ভারতীয় সেনার নতুন ডিভিশনের বিষয়টি উঠে আসছে। উল্লেখ্য যে, সেনার লে ভিত্তিক “১৪ কর্প” পূর্ব লাদাখে এখন নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। এদিকে, তারা উধমপুর-ভিত্তিক নর্দান কমান্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতের শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নয়া ডিভিশনে পদাতিক সেনার বেশ কিছু ব্রিগেড থেকে শুরু করে অস্ত্রাগার ও অন্য ব্যবস্থাপনা থাকতে পারে বলেও খবর মিলেছে।
আরও পড়ুন: চাঁদের সম্পত্তি দখলের প্ল্যান, মহাকাশে সেনা মোতায়েন করল চিন! চরম হুঁশিয়ারি NASA-র
এই প্রসঙ্গে ভারতীয় সেনার একজন শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন যে, “চিনকে যোগ্য জবাব দিতে আমরাও ইস্পাতের কাঠামোর আধুনিক নৌকা মোতায়েন করেছি। চিনা নৌকার ধাক্কাতেও এটির কোনো ক্ষতি হবে না। পাশাপাশি, নজরদারির জন্য রয়েছে ১২ টি নৌকা। এছাড়াও প্রয়োজন পড়লে যাতে হ্রদের মধ্য দিয়ে দ্রুত বাহিনী সংগঠিত করা যায়, সে জন্য আরও ১৭ টি নৌকা রয়েছে।” তবে, এই নতুন ডিভিশন গঠনের ক্ষেত্রে সেনাকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীনও হতে হবে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো রসদ এবং অর্থ। সূত্রের খবর অনুযায়ী, কাশ্মীরে মোতায়ন থাকা বাহিনীর একাংশকে এজন্য নিয়ে আসার কথা ভাবা হলেও সেক্ষেত্রে কাশ্মীরের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে পারে। তাই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচার করে ভারসাম্যের সাথে যাতে বাহিনীকে কাজে লাগানো যায় সেই চেষ্টাই চালানো হচ্ছে।