বাংলা হান্ট ডেস্ক: কথায় আছে, প্রেমে (Love) পড়লে মানুষ অন্ধ হয়ে যায়। অর্থাৎ প্রেমের টানে সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে রেখে নিজের প্রেমকে পূর্ণতা প্রদান করতে রীতিমতো দিকবিদিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন অনেকে। আর সেই কারণেই প্রেম কোনো বয়স এবং দেশের সীমানার উপর নির্ভরশীল নয়। এই চিরসত্যই যেন ফের একবার প্রমাণিত হল। এমনিতেই বর্তমান সময়ে প্রেমে অন্ধ হয়ে গিয়ে একের পর এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটিয়ে ফেলার প্রসঙ্গ আমরা প্রায়শই শুনতে পাই। তবে, এবার যে বিষয়টি সামনে এসেছে সেটি জানার পর রীতিমতো অবাক হয়ে যাবেন সকলেই।
ইতিমধ্যেই এক নজিরবিহীন কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন সীমা হায়দার নামের এক মহিলা। যিনি ভারতের এক যুবকের প্রেমে পড়ে তাঁর চার সন্তানকে নিয়ে পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে আসেন। যদিও, তাঁদের এই প্রেমের সম্পর্ক বর্তমানে আইনের বেড়াজালে আটকে গিয়েছে। মূলত, ২৭ বছর বয়সী সীমা ভারতের গ্রেটার নয়ডার বছর বাইশের যুবক শচীনের প্রেমে পড়ে যান। এমতাবস্থায়, বর্তমানে তাঁরা দু’জনেই গ্রেটার নয়ডা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। শুধু তাই নয়, প্রেমের আড়ালে সীমা হায়দার শচীনের সাথে ভারতের বিরুদ্ধে কোনো বিশ্বাসঘাতকতা করছেন কি না সেটিও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। কারণ যেভাবে ওই মহিলা তাঁর সমস্ত জিনিসপত্র সমেত চার সন্তানকে নিয়ে ভারতে এসে উপস্থিত হয়েছেন এই বিষয়টিই সন্দেহের উদ্রেক করছে ভারতীয় এজেন্সিগুলির কাছে।
এই প্রসঙ্গে গ্রেটার নয়ডার অতিরিক্ত ডিসিপি অশোক কুমারও এই সমস্ত তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ওই এলাকায় এক পাকিস্তানি মহিলার বসবাসের খবর পেয়েছিল পুলিশ। যিনি তাঁর ভারতে প্রবেশের বিষয়ে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে কোনো লিখিত বা মৌখিক তথ্য দেননি। আর সেই কারণে, ওই মহিলার সন্ধানে গ্রেটার নয়ডা পুলিশ ইলেকট্রনিক সার্ভিল্যান্স এবং ইনফরমার সিস্টেমের মাধ্যমে জানতে পারে যে ওই মহিলাটি কোথায় রয়েছেন।
পুলিশ জানায়, ওই মহিলার সন্ধান পাওয়ার পরই জানা যায় তাঁর নাম সীমা গোলাম হায়দার। তিনি পাকিস্তানের বাসিন্দা। এদিকে, গ্রেটার নয়ডা এলাকার রাবুপুরা গ্রামের একটি মুদি দোকানে কাজ করা শচীনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ ছিল সীমা হায়দারের। তাঁরা PUBG গেমের মাধ্যমে একে অপরকে চিনেছিলেন।
নেপাল হয়ে ভারত প্রবেশ: এমতাবস্থায় সীমা তাঁর থেকে বয়সে অনেকটাই ছোট শচীনের প্রেমের টানে পাকিস্তান ছেড়ে সোজা ভারতে চলে আসেন। জানা গিয়েছে, তিনি নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। গ্রেটার নয়ডা পুলিশ জানিয়েছে, সীমা হায়দার চার সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। কারণ তিনি জানতেন যে, পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে গেলে সেখানে (পাকিস্তান) কেউ তাঁর সন্তানদের যত্ন নেবে না।
এদিকে, শচীনের কাছে আসার পর সীমা সিদ্ধান্ত নেন তিনি তাঁর পরিচয় গোপন করতে, সালোয়ার স্যুট এবং শাড়িও পরবেন। যাতে শচীন যে ভাড়া বাড়িতে থাকেন সেখানে তিনি তাঁর স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতে পারেন। এমতাবস্থায়, তাঁরা যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সেই বাড়ির বাড়িওয়ালা ব্রিজেশকে পুলিশ ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
বাড়িওয়ালা পুলিশকে জানিয়েছেন, গত মে মাসে শচীন সীমাকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর কাছে এসেছিলেন। শচীন জানিয়েছিলেন, সীমার সঙ্গে তাঁর কোর্ট ম্যারেজ হয়েছে। চার ছেলেমেয়েকে একসঙ্গে দেখে বাড়িওয়ালার মনে কোনো সন্দেহও ছিল না। তাই, তিনি সীমা হায়দার ও শচীনকে একটি রুম ভাড়া দেন বলেও জানা গিয়েছে।