বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় প্রতিদিনই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসায় অস্বস্তি ক্রমশ বেড়ে চলেছে শাসক দলের। এসএসসি (SSC) থেকে প্রাথমিক টেট (Primary Tet) ও অন্যান্য একাধিক দুর্নীতিতে জেরবার তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। অতীতে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে এ সকল দুর্নীতি মামলার তদন্তের দায়ভার তুলে দেওয়া হয় সিবিআইয়ের (CBI) হাতে। এদিন রাজ্য সরকারের অস্বস্তি আরো বাড়িয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)।
একটি মামলার শুনানি চলাকালীন এদিন অভিজিৎবাবু বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে টাকা না দিলে চাকরি মেলে না।” তাঁর এই মন্তব্যের পর নিয়োগ সংক্রান্ত ইস্যুতে দুর্নীতির চিত্র আরো প্রকট হয়ে উঠলো।
উল্লেখ্য, এদিন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি শুরু হয়। এক্ষেত্রে এক ব্যক্তিকে চাকরি প্রদান করা হলেও চার মাস পর একপ্রকার কোনও কারণ ছাড়াই তাঁর চাকরিটি বাতিল করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ওই ব্যক্তি। এদিন সেই মামলার শুনানি চলাকালীন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “মামলাকারী হয়তো মানিক ভট্টাচার্যকে টাকা দেননি। সেই কারণেই তার চাকরি বাতিল গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বর্তমানে এমন একটা রাজ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে টাকা না দিলে মিলবে না চাকরি।”
একই সঙ্গে চার মাস পর চাকরি বাতিল হওয়ার বিষয়ে রাজ্যের দিকে একাধিক প্রশ্ন ছুড়ে দেন বিচারপতি। উল্লেখ্য, মিরাজ শেখ নামে মুর্শিদাবাদের এক ব্যক্তি গত বছর প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিযুক্ত হন। তবে চার মাস পর আচমকাই তাঁর চাকরিটা বাতিল হয়ে যায়। এক্ষেত্রে চাকরি বাতিল হওয়ার কারণ সম্পর্কে কোন সুস্পষ্ট ধারণা মেলেনি।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী, চাকরির ক্ষেত্রে সাধারণের জন্য স্নাতক স্তরে অনার্সে ৫০ শতাংশ নম্বর থাকা প্রয়োজন। অপরদিকে, সংরক্ষিতদের জন্য সেই নম্বরের পরিমাণ ৪৫ শতাংশ। আদালতে পেশ করা তথ্য অনুযায়ী, মিরাজ শেখ নামে ওই মামলাকারী স্নাতক স্তরে ৪৬ শতাংশ নম্বর পান, কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁর চাকরি বাতিল করার প্রসঙ্গে এদিন ক্ষুব্ধ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। রাজ্যের দিকে একাধিক প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়ার পাশাপাশি ওই ব্যক্তিকে এদিন চাকরি ফিরিয়ে দিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আদালত সূত্রে খবর, দ্রুত তাঁকে শিক্ষক পদে পুনর্নিয়োগ করার নির্দেশও দেন তিনি।