বাংলা হান্ট ডেস্ক : পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election) নিয়ে তুলকালাম চলছেই। রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) যাতে মোতায়েন করা হয় সেজন্য কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। আদালত এই মামলায় বিজেপির (Bharatiya Janata Party) পক্ষেই রায় দেয়। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তৃণমূলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন, ‘আমরাও তো চাইছি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসুক। প্রতি বুথে বাহিনী মোতায়েন করা হোক। একজনের জায়গায় দশ জন দেওয়া হোক।’
এরপরই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তা হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন আপত্তি করেছিল কেন? অভিষেক এর উত্তরে বলেন, ‘কমিশনই এর সঠিক জবাব দিতে পারবে। তবে আমার মনে হয় যে কমিশনের হয়তো মনে হয়েছিল, তাঁর অধিকার বা এক্তিয়ারের জায়গাটা সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। ভোটে কী ব্যবস্থাপনা থাকবে তা স্থির করার এক্তিয়ার শুধু তাদেরই রয়েছে। তাই হয়তো ইতস্তত করেছিল।’
পঞ্চায়েত নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই অভিষেক প্রচার করেছিলেন যে হিংসা বা অশান্তি হবে না এই ভোটে। পঞ্চায়েতে যদি বিরোধীদের কেউ মনোনয়ন জমা দিতে না পারেন, তাহলে যেন তাঁকে বলেন। তিনি দাঁড়িয়ে থেকে মনোনয়নের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু দেখা যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনা বারবার অশান্ত হয়েছে। ভাঙড়ে শাসক দল ও আইএসএফের সংঘাতে হতাহত হয়েছেন অনেকে। ক্যানিং ১ নম্বর ব্লক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেছে তৃণমূল। ভাঙড় ১ নম্বর ব্লকে ৭০ শতাংশ বুথে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না।
এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে অভিষেক বলেন, ‘ভাঙড়ে যা ঘটেছে তা হওয়া উচিত ছিল না।’ তিনি বলেন, একটা কথা সবাইকে মানতে হবে। তা হল, গত বিশ-ত্রিশ বছর ধরে বাংলায় যে ধরনের পঞ্চায়েত ভোট দেখেছি, এবার তার চেয়ে অন্যরকম। ২ লক্ষ ৩৬ হাজার প্রার্থী ভোটে লড়ছেন। এটা দারুণ ঘটনা। বাম জমানায় বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটে যে ধরনের হিংসা হত, তা অনেকটাই কমিয়ে ফেলা গিয়েছে।
অভিষেকের আরও দাবি, ‘আমি মৃতের সংখ্যা দিয়ে কোনও কিছুর যথার্থতা প্রমাণ করতে চাইছি না। যে কোনও মৃত্যুই দুঃখের। পঞ্চায়েত ভোটে একজনেরও মৃত্যু কাম্য নয়। কিন্তু এও ঠিক বিক্ষিপ্ত কিছু এলাকা ছাড়া আগের মতো সার্বিক ভাবে অশান্তির ঘটনা নেই। তা থাকলে এত মনোনয়ন জমা পড়ত না।’
এদিন ‘মিট দ্য প্রেস’ আয়োজন করেছিল কলকাতা প্রেস ক্লাব। সেখানেই সাংবাদিকদের সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন অভিষেক। এবং তার মাধ্যমে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে বাংলায় পঞ্চায়েত ভোট যথাসম্ভব শান্তিপূর্ণ করানোর তাগিদ তাঁদেরও রয়েছে।