বাবা এসি মেকানিক! আর্থিক অনটনকে পিছনে ফেলে ক্যাট পরীক্ষায় ৯৯.৭৮ পার্সেন্টাইল পেল ছেলে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে রেখে নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে স্বপ্নপূরণের মাধ্যমেই মেলে সাফল্য। আর যাঁরা এই অসাধারণ সাফল্যের মুখোমুখি হন তাঁরা সকলের কাছে হয়ে ওঠেন এক দৃষ্টান্ত। এবার ঠিক সেইরকমই এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ২২ বছরের রাজিন মনসুরি। হাজারও প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েও তিনি লড়াই করে গিয়েছেন। আর সেই লড়াইয়ের ওপর ভর করেই চলতি বছরের “কমন অ্যাডমিশন টেস্ট” (Common Admission Test, CAT) পরীক্ষায় তিনি পেয়েছেন ৯৯.৭৮ পার্সেন্টাইল।

তবে, রাজিনের এহেন দুর্দান্ত সাফল্যের পথটি ছিল অত্যন্ত কন্টকাকীর্ণ। আহমেদাবাদের জুহাপুরা এলাকার বাসিন্দা রাজিনের বাবা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র মেরামতির কাজ করেন। বাড়িতে আর্থিক অনটনকে সঙ্গী করেই বাবা, মা ও এক ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন রাজিন। এমতাবস্থায়, রাজিন ভালোভাবে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সংসারের হাল ধরতে চেয়েছিলেন। আর সেই মতোই পরিশ্রম শুরু করেন তিনি। এদিকে, ক্যাট পরীক্ষায় চমকপ্রদ ফলাফলের ভিত্তিতে এবার তিনি আহমেদাবাদ বা বেঙ্গালুরু আইআইএমে সুযোগ পেতে পারেন।

জানা গিয়েছে, একদম ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল রাজিনের। এমনকি, কোথাও কোচিং না নিয়ে বৃত্তির মাধ্যমেই তিনি নিজের পড়া চালিয়ে যান। এমতাবস্থায়, ম্যানেজমেন্ট পড়ার লক্ষ্যে গত বছর ক্যাট পরীক্ষায় বসেছিলেন এই মেধাবী পড়ুয়া। পাশাপাশি, ভালো ফলও করেছিলেন তিনি। যদিও, রাজিন নিজে তাতে সন্তুষ্ট হন নি।

যে কারণে ফের প্রস্তুতি নিতে থাকেন তিনি। এদিকে, রাজিনের লড়াকু মনোভাব এবং মেধাকে প্রত্যক্ষ করে তাঁকে অর্ধেক খরচে কোচিং দেন এক শিক্ষক। এদিকে, নিজের এই সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজিন জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা আদৌ ভালো নয়। তাই স্কুলে পড়ার সময় থেকেই আমার লক্ষ্য থাকত বৃত্তি পাওয়ার। ঐভাবেই আমি আমার স্কুলের পড়াশেষ করি। তারপর আহমেদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেধাবৃত্তি পেয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করি।”

aa15xlky

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, রাজিন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পরে একটি চাকরিও পেয়েছিলেন। যেখানে তাঁকে বছরে ৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু, তিনি আরও ভালো কিছু করার লক্ষ্যে চাকরির পথে না হেঁটে ম্যানেজমেন্ট পড়তে চান। যদিও, অর্থের অভাবে কোচিং নিতে সমস্যা হয় তাঁর। এমতাবস্থায়, তাঁকে অর্ধেক খরচে পড়াতে শুরু করেন কোচিং সেন্টারের এক শিক্ষক। আর এভাবেই শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যপূরণ করেন তিনি। এই প্রসঙ্গে রাজিন জানান, “অবশেষ লক্ষ্যপূরণ করতে পেরে সত্যিই আনন্দিত। এখন আমার মত লড়াই করে যাঁরা স্বপ্নপূরণের চেষ্টা করছে তাঁদেরকে আমি সাহায্য করতে চাই। “


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর