বাংলা হান্ট ডেস্ক : অভিযোগের শাক দিয়ে আর দুর্নীতির মাছ ঢাকা গেলনা। পুর নিয়োগ মামলায় (Municipality Recruitment Scam) উদ্ধার হওয়া নথির পাতা থেকে ইডির (Enforcement Directorate) নজরে এল একাধিক ‘কোড’ (Code)। কোথাও লেখা ‘সিএইচ’ কোথাও ‘ডিআই’। আর এই কোড ডিকোড করতেই সামনে এল রাঘব বোয়ালদের নাম। সাংকেতিক শব্দের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে এক বর্তমান মন্ত্রীর পাশাপাশি এক প্রাক্তন মন্ত্রীর নাম। উদ্ধার হওয়া নথি বলছে, এক মন্ত্রী নিজেই পুরসভায় নিয়োগের জন্য একাধিক প্রার্থীর হয়ে সুপারিশ করেছিলেন।
এর আগে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার কুন্তল ঘোষ এবং শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সূত্র ধরে সামনে আসে প্রমোটার অয়ন শীলের নাম। এরপর অয়নের সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ২৮ পাতার একটি ওএমআর শিট উদ্ধার করে ইডি। নথির মধ্যে প্রার্থী তালিকায় থাকা নামের পাশে বেশ কিছু ‘কোর্ড ওয়ার্ড’ খুঁজে পান তদন্তকারী কর্মকর্তারা। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই নথিতে ‘সিএইচ’, ‘ডিআই’, ‘এসবি’, ‘এমএম’, ‘এ’ ইত্যাদি একাধিক ‘কোড ওয়ার্ড’ লেখা ছিল। সেখান থেকেই এক প্রাক্তন মন্ত্রীর নাম খুঁজে পায় ইডি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যের সেই প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়িতে ইতিমধ্যেই একবার তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। এছাড়াও ঐ ২৮ পাতার নথি থেকে মিলেছে বিভিন্ন পুরসভার নিয়োগের সংক্রান্ত প্যানেলের প্রার্থীর তথ্যাবলি। সেখানেই রয়েছে মেডিক্যাল অফিসার, মজদুর, ওয়ার্ড মাস্টার, ক্লার্ক, অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশিয়ার, হেল্পার, ড্রাইভার-সহ একাধিক পদে নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের সুপারিশের তালিকা। এই সুপারিশের পেছনে ঠিক কাদের হাত রয়েছে? সেই তদন্তে সামনে এসেছে বিভিন্ন নেতামন্ত্রীদের নাম। নাম রয়েছে অয়নেরও।
আরও পড়ুন : আমডাঙার পর এবার গোসাবায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের! পিটিয়ে খুন তৃণমূলের বুথ সভাপতিকে
এর আগে ইডির জেরায় অয়ন জানিয়েছিল, পুর নিয়োগে দুর্নীতির সূচনা হয়েছিল ২০১৪-১৫ সাল থেকে। কর্মী নিয়োগের বরাত পেয়েছিল অয়নের সংস্থা ‘এবিএস ইনফোজ়োন’। ইডি সূত্রে খবর, সেই সময় প্রায় ৬,০০০ কর্মীর নিয়োগ হয় অয়নের সংস্থার মাধ্যমে। যারমধ্যে প্রায় ৫০০০ নিয়োগে গরমিল রয়েছে বলে ধারণা ইডি তদন্তকারী কর্মকর্তাদের। এই দুর্নীতির আঁতুরঘর খুঁজতে গিয়ে রাজ্যের দুই মন্ত্রীর বাড়িতে হানা দেয় ইডি ও সিবিআই। একদিকে ইডি হানা দেয় খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের (Firhad Hakim) বাড়ি। সিবিআই এর রেইড পড়ে পুর ও নগরন্নোয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) বাড়িতে।
আরও পড়ুন : ঘূর্ণিঝড় মিধিলির পর এবার মিউগাজম! পরিষ্কার আকাশ উত্তরে, কী খবর দক্ষিণবঙ্গের? IMD আপডেট
আর এবার আরও এক মন্ত্রীর নাম সামনে এসেছে বলে খবর। এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া সমস্ত নথিকে আতশকাচের তলায় এনে সরেজমিনে তদন্ত শুরু করেছে ইডি। যদিও এই গোটা ঘটনাতে ‘রাজনীতির গন্ধ’ পেয়েছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তার চেতলার বাড়িতে তল্লাশি করা নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছিলেন তিনি। ওদিকে রথীনের গলাতেও শোনা যায় একই সুর। তার দাবি, তাকে হেনস্থা করার উদ্দেশ্যেই ইডির এই অভিযান। উল্লেখ্য, ইডি এবং সিবিআই রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ দুই মন্ত্রীর বাড়ি তল্লাশি করলেও ফিরহাদ বা রথীন কেউই এখনও তদন্তকারী সংস্থার দফতরে যাওয়ার ডাক পাননি। এখন এই কোড ডিকোডের পর ডাক পড়ে কি না তা তো সময়ই বলবে।