নয়’বার মুখ্যমন্ত্রী, ২৮ বছরে তিনবার বিজেপির সঙ্গে! জানুন নিতিশ কুমারের সম্পত্তি

বাংলা হান্ট ডেস্ক : বিগত কয়েকদিন ধরেই তোলপাড় হয়ে রয়েছে বিহার (Bihar) রাজনীতি। সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে পঞ্চমবার জোট বদল করে নবমবারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী (Bihar CM) পদে শপথ নিলেন জেডিইউ (JDU) প্রধান নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। আজকেই বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘পুরনো জোটের সঙ্গে কাজ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠছিল। এখন আমরা নতুন জোট নিয়ে নতুন সরকার গঠন করব।’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২৮ বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো বিজেপিতে (BJP) যোগ দিচ্ছেন নীতীশ (Nitish Kumar)। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার বিজেপির সঙ্গে জোট করেছিলেন নীতীশ। ৩ মার্চ, ২০০০-এ ফের মুখ্যমন্ত্রী হন, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা সংগ্রহ করতে না পারার কারণে পদ ছেড়ে দেন এবং অটলজির সরকারে কেন্দ্রে রেলমন্ত্রী হন। এরপর ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিজেপিতে থাকার পর বিজেপি যখন নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করে, তখন তিনি NDA থেকে আলাদা হয়ে যান। সাল ২০১৫ তে মহাজোট সরকারে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এরপর ২০১৭ সালে ফের একবার এনডিএ-তে ফিরে আসেন এবং বিজেপির সহায়তায় সরকার গঠন করেন।

আর এবার ২০২৪ সালে তিনি বিজেপির সহায়তায় তৃতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হবেন। গত ২৮ বছরে তৃতীয়বার বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন তিনি। এইমুহুর্তে বিধানসভায় বিজেপির ৭৮ জন বিধায়ক রয়েছেন। সেই সাথে JDU-এর ৪৫ এবং HAM-এর ৪ জন বিধায়ক রয়েছে। ২৪৩-সদস্যের বিধানসভায়, তিনটি দলের মিলে এই সংখ্যা ১২৭, যা সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যা ১২২-এর চেয়ে পাঁচ বেশি।

আরও পড়ুন : দরকারে মানুষের মতো কথা বলে গাছেরাও! ভিডিও দেখিয়ে বড় প্রমাণ দিয়ে চমকে দিলেন বিজ্ঞানীরা

বিহারের এই রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নীতীশ কুমারের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছে সকলে। এর আগে নীতীশের পরিবার বরাবরই লাইমলাইট থেকে দূরে ছিল। নীতীশ কুমারের একমাত্র ছেলে নিশান্ত কুমারও খুব কমই খবরে রয়েছেন। এ ছাড়া নীতীশের ভাই, বোন এবং স্ত্রী সম্পর্কে মানুষ খুব কমই জানে। এমন পরিস্থিতিতে আজ আমরা আপনাকে নীতীশ কুমারের পুরো পরিবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেব।

আরও পড়ুন : নিজের জন্মদিনেই জন্মদাত্রীর শেষকৃত্য, মায়ের স্বপ্নপূরণের জন্য বড় শপথ নিলেন সায়নী

১৯৫১ সালের ১ মার্চ বিহারের বখতিয়ারপুরে জন্মগ্রহণ করেন নীতীশ। বাবা রাম লখন সিং ছিলেন একজন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। পড়াশোনার কথা বললে, 1972 সালে বিহার কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং (বর্তমানে এনআইটি পাটনা) থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি নেন। পড়াশুনা শেষে বিহার ইলেকট্রিসিটি বোর্ডে কাজ শুরু করেন। এবং কয়েকবছর চাকরি করার পর তিনি যোগ দেন রাজনীতিতে‌। ৭০ এর দশকে গোটা দেশ যখন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল তখন তিনিও সেই ক্ষোভে সামিল হন।

আরও পড়ুন : ‘হিরণ থেকে মিঠুন-ঝুলন’, লোকসভা নির্বাচনে BJP-র প্রার্থী তালিকায় বড় চমক! জল্পনা তুঙ্গে

nitish kumar 1706421982422 1706421999415

এরপর জনতা পার্টির সদস্য হিসাবে প্রথমবার ১৯৭৭ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, কিন্তু হেরে যান। ১৯৮৫ সালে, তিনি আবার বিহার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং জয়ী হন। ১৯৮৭ সালে, তিনি জনতা পার্টির রাজ্য সভাপতি নিযুক্ত হন। রাজনৈতিক কেরিয়ার যত এগিয়েছে ততই এগিয়েছে নীতীশের সম্পত্তিও। ২০২৩ সালের শেষ দিনে জেডিইউ তার মন্ত্রিপরিষদের মন্ত্রীদের যে আর্থিক বিবরণ প্রকাশ করেছে তাতে বলা হয়েছে নীতীশ কুমারের কাছে ২২,৫৫২ টাকা নগদ এবং তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোট ৪৮ হাজার টাকা জমা রয়েছে৷

আরও পড়ুন : বেপরোয়া দখলদারি, চলা দায় শিয়ালদহে! এবার বড় অ্যাকশন নিল পূর্ব রেল, ঘুম ছুটবে অনেকের

এছাড়াও নীতীশের অস্থাবর সম্পদের মূল্য ১৬.৮৪ লক্ষ টাকা, এবং তিনি দিল্লির দ্বারকা এলাকায় ১,০০০ বর্গফুট ফ্ল্যাটের অধিকারী। এছাড়াও ১.৪৮ কোটি মূল্যের একটি সম্পত্তি রয়েছে তার। এছাড়াও নীতীশের কাছে রয়েছে ১১.৩২ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি ফোর্ড ইকোস্পোর্ট গাড়ি রয়েছে, সঙ্গে দুটি সোনার আংটি এবং ১.২৮ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি রূপার আংটি রয়েছে৷ তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ১৩টি গরু এবং ১০টি বাছুর রয়েছে, যার সমষ্টিগত মূল্য ১.৪৫ লাখ টাকা।

Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর