বাংলাহান্ট ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সফরের পর এবার ভারতে (India) আসতে চলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সূত্রের দাবি, ২০২৬ সালের জানুয়ারিতেই সংঘাতের মধ্য দিয়ে শান্তির নতুন পথ খুঁজতে দিল্লিতে পা রাখতে পারেন তিনি। ইতিমধ্যেই সফরের দিনক্ষণ নির্ধারণে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র সরকারের শীর্ষস্তর। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারত ও ইউক্রেনের কূটনৈতিক মহলের মধ্যে জোর আলোচনা চলছে। পুতিনের সফরের আগেও এই ইস্যু নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একদফা বৈঠক সম্পন্ন হয়েছিল। ফলে, রুশ প্রেসিডেন্টের সফরের মাত্র এক মাস পর জেলেনস্কির ভারতের মাটিতে আসা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে।
পুতিনের পর এবার ভারত (India) সফরে আসছে জেলেনস্কি:
রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ভারত (India) নিরপেক্ষ ভূমিকা রেখে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারবার শান্তি আলোচনার গুরুত্বের কথা বলেছেন এবং যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। এই নিরপেক্ষ অবস্থানই দুই দেশকে বারবার দিল্লির দিকে তাকাতে বাধ্য করেছে। পুতিন ও জেলেনস্কি—দু’জনেই প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, এই যুদ্ধের ইতি টানতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে ভারত। জেলেনস্কির সম্ভাব্য ভারত সফর এই বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করছে, পাশাপাশি শান্তি প্রতিষ্ঠার কূটনৈতিক মঞ্চ হিসেবে আবারও গুরুত্ব বাড়াচ্ছে দিল্লির।

আরও পড়ুন:ডোনাল্ড ট্রাম্প এভিনিউ! ভারতের এই শহরে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নামে হচ্ছে রাস্তা, কেন এমন সিদ্ধান্ত?
তবে জেলেনস্কির এই সফরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা নির্ভর করছে একাধিক বিষয় উপর। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার অগ্রগতি, যুদ্ধক্ষেত্রের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, এবং ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ—সবই এই সফরের সময় নির্ধারণে প্রভাব ফেলবে বলে কূটনৈতিক সূত্রের দাবি। যুদ্ধের তৃতীয় বছরে দাঁড়িয়ে ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন জেলেনস্কির জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ কঠিন করছে বলেও মনে করা হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য, ভারত (India)-ইউক্রেনের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট তিনবার ভারত সফর করেছেন—১৯৯২, ২০০২ এবং ২০১২ সালে।
গত বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথম ভারতীয় হিসেবে ইউক্রেন সফর করেন। সেই সফরেই জেলেনস্কিকে ভারত (India) সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি। ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার পোলিশচুক আগেই জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্টের ভারত সফর খুব শিগগিরই হতে পারে, কিন্তু নানা আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি। এবার পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে ২০২৬ সালের জানুয়ারি জেলেনস্কির জন্য হবে প্রথম ঐতিহাসিক ভারত সফরের মাস।
আরও পড়ুন:এবারে লক্ষ্য T20 সিরিজ! প্রথম ম্যাচের আগেই টিম ইন্ডিয়ায় যোগ দিলেন শুভমান গিল
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জেলেনস্কি ও পুতিন উভয়েই যদি মোদির মধ্যস্থতায় আলোচনার টেবিলে বসেন, তবে তা হবে ভারতের (India) জন্য বিশাল কূটনৈতিক জয়। পুতিনের সঙ্গে মোদির সম্পর্ক বরাবরই দৃঢ়, আর জেলেনস্কির বর্তমান অবস্থায় ট্রাম্পের পরিবর্তে মোদিকে ‘শান্তির দূত’ হিসেবে দেখা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন বাস্তবতা তৈরি করেছে। তাই দিল্লি যদি ভারসাম্যের কূটনৈতিক কৌশল বজায় রেখে যুদ্ধ থামানোর পথে আলোচনার দরজা খুলে দিতে পারে, তবে তা শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই হবে ঐতিহাসিক এবং তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা।












