সঞ্জয়কে ফাঁসি নয়! এবার বৃদ্ধাকে ধর্ষণ কাণ্ডে কী রায় দিলেন জাস্টিস অনির্বাণ দাস?

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর (RG Kar) কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়কে কিছুদিন আগেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতার শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। তিলোত্তমার নির্মম ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্জয়কে ফাঁসি না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়ায় ব্যাপক জনরোষের মুখে পড়েছিলেন জাস্টিস দাস। রাজ্যজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলে তিনি। এবার এই জাস্টিস দাস’ই  সাজা ঘোষণা করেছেন  আরো এক ধর্ষণকাণ্ডের। বেলেঘাটার বৃদ্ধাকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তকে সাত বছর কারাদণ্ডের শাস্তি দিয়েছেন তিনি। একইসাথে জরিমানা বাবদ ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরজি কর (RG Kar) কাণ্ডের পর বেলেঘাটার বৃদ্ধাকে ধর্ষণ কাণ্ডে কী নির্দেশ দিলেন অনির্বাণ দাস?

এখানে বলে রাখা ভালো বেলেঘাটার যে বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল ২০২১ সালে করোনা মহামারির সময় মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এই মামলায় দোষী যুবক প্রথমে জামিন পেলেও শেষ পর্যন্ত শাস্তি পেতে হয়েছে তাকে। বৃহস্পতিবার ওই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক অনির্বাণ দাস। পুলিশ সূত্রে খবর ২০২০ সালে জুলাই মাসে বেলেঘাটার বাসিন্দা ওই বৃদ্ধাকে একা পেয়ে ধর্ষণ করেছিল বিধান বসু নামে এক যুবক। অভিযুক্ত যুবক নির্যাতিত বৃদ্ধার বাড়িতে ভাড়া থাকত। জানা যায় বিধান বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করে বেড়ানোর সময় তাকে দেখে ফেলেছিলেন বৃদ্ধার বাড়ির অন্য এক ভাড়াটে।

ঘটনার পর এর এনআরএস হাসপাতালে বৃদ্ধার শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে ধর্ষণের মামলার রুজু করেছিল পুলিশ। ২০২০ সালের ১৬ জুলাই অভিযুক্ত বিমান বসু ওরফে রাজুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যদিও করোনার সময় ২০২১ সালে ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। কিন্তু তার দেওয়া গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতেই চলতে থাকে মামলা। করোনা পর্বে অভিযুক্ত যুবক জামিন পেলেও  ২০২৩ সালে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া আবার শুরু হয়। এই মামলায় মোট ১১ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করে আদালত।

আরও পড়ুন: একদম সময় নষ্ট নয়! কড়া বিজ্ঞপ্তি জারি করল নবান্ন, কি বলা হয়েছে?

বিধান বসুকে শাস্তি দেওয়ার আগে তার বক্তব্য জানতে চেয়ে বিচারক তাকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি বিধান বসু? আপনাকে কাল বলেছিলাম আপনি দোষী৷ সাজার বিষয়ে আপনার কী বক্তব্য?’ জবাবে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে অভিযুক্ত দাবি করেছিল, ‘আমি বৃদ্ধার বাড়িতে ভাড়া থাকতাম। উনি প্রায়ই টাকা চাইতেন।  আমি দিইনি বলে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি নির্দোষ।’

Judge Anirban Das

জবাবের বিচারক অনির্বাণ দাস বলেন, ‘আপনি বিবাহিত। বাড়ি থেকে কেউ এসেছেন?’ বিধান জানায় তার তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী এসেছেন আদালতে। এ কথা শোনার পর বিচারক দাস বলেন আপনি যা বলছেন তা প্রমাণ করতে পারেননি, এটা দুর্ভাগ্যজনক৷’ এর পরেই অভিযুক্ত বিধান বসুর ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং দশ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন বিচারক৷ জরিমানা দিতে না পারলে আরও দশ মাস জেলের শাস্তি দেওয়া হয় তাকে৷ আদালতের রায় শোনার পরেই এদিন কান্নায় ভেঙে পড়ে বিধান বসুর স্ত্রী।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর