বাংলাহান্ট ডেস্ক : কোভিড পরবর্তী বিশ্বে খাদ্য সংকট যেন এক বিকট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের (India) প্রতিবেশী দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka) ইতিমধ্যেই গৃহযুদ্ধ ও আর্থিক সংকটে জেরবার। সঙ্গে রয়েছে প্রবল খাদ্য সংকটও। এবার ভারতের আরও এক প্রতিবেশী দেশে পড়ল খাদ্য সংকটের ছায়া। ভুটানে (Bhutan) খাদ্যদ্রব্যের প্রবল ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ভুটানের গ্রামাঞ্চলে মানুষ খাদ্য ও পানীয়ের সংকটে পড়েছেন। ভুটানের অর্থমন্ত্রী লোকনাথ শর্মা বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে একথা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন।
ভুটানের জনসংখ্যা ৮ লক্ষেরও কম। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে এই ছোট্ট দেশটিতেও। তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব জুড়ে অপরিশোধিত তেল এবং শস্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে আকাশছোঁয়া। যার ফল ভোগ করছে ভুটান। মহামারী কাটিয়ে ফিরে আসার পর ভুটানের অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কা খেল এই ঘটনায়।
ভুটান সেই সব প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে একটি যারা খাদ্য সামগ্রীর অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে অনেকাংশেই ভারতের উপর নির্ভরশীল। পরিসংখ্যান বলছে ভুটান গত বছর ভারত থেকে ৩০.৩৫ মিলিয়ন ডলারের খাদ্যশস্য কিনেছে। ভুটান মূলত ভারত থেকে চাল ও গম কেনে। তবে ভারত গম ও চিনি রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ভুটানের উদ্বেগ বেড়েছে আরও। ভুটানের অর্থমন্ত্রীও এই বিষয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছেন।
কোনও দেশের নাম না করে ভুটানের অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্য সামগ্রীর অভাবে মূল্যবৃদ্ধি আরও বাড়তে পারে। কিছু দেশ খাদ্যশস্য রফতানি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর প্রভাব কী হবে, তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত ভুটান সরকার।’ তবে ভারত স্পষ্টভাবে বলেছে যে তারা প্রতিবেশী দেশগুলোতে খাদ্যশস্য রফতানি অব্যাহত রাখবে। সেই সঙ্গে সংকটের মুখে থাকা দেশগুলোকে খাদ্যশস্য দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে ভারত।
তবে ভারতের সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বিগ্ন একমাত্র ভুটানের অর্থমন্ত্রীই নন। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ভুটানের চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মহাসচিবও এই নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মহাসচিব সাঙ্গে দরজি বলেন, খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়লে স্থানীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা খাদ্য সামগ্রীর সরবরাহ নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। মূল্যস্ফীতির পর এই সংকট পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলবে। তবে আমরা সবরকম ভাবে চেষ্টা করব এই সংকটময় পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার।’