বাংলা হান্ট ডেস্ক : গতকাল থেকেই গোটা দেশের নজর ছিল জামা মসজিদের (Jama Masjid) উপর। বহুল চর্চিত এই জামা মসজিদের শুনানি ছিল গত মঙ্গলবার। দিওয়ানির সিভিল জজ (সুপিরিয়র ডিভিশন) আদালতে হবে এই মামলার শুনানি। উল্লেখ্য, এই মামলার মূল বক্তব্য ছিল, জামা মসজিদের সিঁড়ির নীচে শ্রীকৃষ্ণের মূর্তি পুঁতে রাখা রয়েছে। জামা মসজিদ শামসির বৈজ্ঞানিক জরিপ সংক্রান্ত বিরোধ ও সেখানে পুজো করার অনুমতির দাবি নিয়ে আদালতে শুনানি হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (19 ডিসেম্বর, 2023) সিভিল জজ সিনিয়র ডিভিশন (ফাস্ট ট্র্যাক) আদালতে এই বিষয়ে ‘অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভা’-এর পক্ষ থেকে একটি আবেদন করা হয়েছিল। এবং সেই পিটিশনকে সঠিক প্রমাণ করার জন্য, হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে গেজেট প্রমাণও পেশ করা হয়েছিল। এইদিন শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি প্রটেক্টেড সার্ভিস ট্রাস্টের অ্যাডভোকেট বিনোদ শুক্লা জানিয়েছেন, ‘বিরোধী দলগুলি আদালতে মামলাটি স্থগিত করার চেষ্টা করে৷ যার কারণে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতকে 6 মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছে ।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, 2022 সালের অগাস্ট মাসে হিন্দু মহাসভার রাজ্য সংযোজক মুকেশ প্যাটেল মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য বাদাউনের জেলা আদালতে আবেদন করেছিলছন। তিনি দাবি করেছিলেন, আগে জামা মসজিদ শামসির জমিতে নীলকান্ত মহাদেব মন্দির ছিল। পূর্বে মুসলিম শাসকরা এই মন্দির ভেঙ্গে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। সেখানে এখনও মন্দিরের অবশিষ্টাংশ রয়েছে বলে যুক্তি দেখিয়ে হিন্দু পক্ষ সেখানে পূজার অনুমতি চেয়েছিল।
যদিও জামা মসজিদ শামশির তরফ থেকে এ আবেদন খারিজ করার দাবি করা হয়েছে। অন্যদিকে মঙ্গলবার এই আদালতে শুনানির সময়, হিন্দু মহাসভার অ্যাডভোকেট বেদপ্রকাশ সাহু জামা মসজিদ শামসির বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার জন্য আবেদন করেছিলেন। তার মতে, আবেদনের স্বপক্ষে গেজেটিয়ারে উপস্থিত তথ্য-প্রমাণ আদালতে দেওয়া হয়েছে। এখন কেবল শুনানির অপেক্ষা। হিন্দু পক্ষের দাবি, উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা, কাশী ও মথুরার পর বাদাউনের জামা মসজিদ শামসিতেও ভগবান শঙ্করের মন্দির ধ্বংস করে মসজিদ তৈরি করেছিল ইসলামিক হানাদাররা।
হিন্দু পক্ষের দাবি, ভারতে ইসলামি আক্রমণকারীদের আগমনের আগে এই স্থানে ভগবান শিবের একটি নীলকান্ত মন্দির ছিল। বাদাউনের সুবেদার থাকাকালীন ভারতের প্রথম ইসলামি শাসক কুতুবউদ্দিন আইবকের জামাতা ইলতুৎমিশ এই মন্দিরটি ভেঙে এখানে জামা মসজিদ শামসি নির্মাণ করেন। হিন্দু পক্ষের দাবি, এর প্রথম প্রমাণ মিলেছে 1875 থেকে 1880 সাল পর্যন্ত বাদাউন থেকে বিহার পর্যন্ত পরিচালিত আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (ASI) সমীক্ষার ‘TOURS IN THE GANGETIC PROVINCES from Badaon to Bihar’ নামে 148 বছরের পুরনো রিপোর্টে। বলা হয় এটি ASI এর প্রতিষ্ঠাতা আলেকজান্ডার কানিংহাম নিজেই প্রস্তুত করেছিলেন। প্রতিবেদনের প্রথম পৃষ্ঠাতেই বাদাউনের বিতর্কিত জামা মসজিদ শামসির সমীক্ষা প্রতিবেদন রয়েছে। সেখানে লেখা আছে, বাদাউনে ইসলামি হানাদারদের শাসনের আগে রাজা মহিপাল হরমন্দর নামে একটি হিন্দু মন্দির নির্মাণ করেছিলেন।