বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে রেশন, সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে রাজ্যের শাসক দলের। তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক হেভিওয়েট নেতা বর্তমানে জেলবন্দি। সম্প্রতি আবার এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় নজিরবিহীন রায় দিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই উঠল স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ।
সরকারি হাসপাতালের হাউসস্টাফ নিয়োগের (House Staff Recruitment) পদ্ধতিতে এবার দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন চিকিৎসকের একাধিক সংগঠন এবং নবীন চিকিৎসকদের একাংশ। চিকিৎসক হতে গেলে একটি দীর্ঘ পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয় পড়ুয়াদের। MBBS পাশের পর রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার জন্য ইন্টার্নশিপ করতে হয় হবু ডাক্তারদের। তারপরেই রেজিস্ট্রেশন পান তাঁরা।
রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার পর আবার হাউসস্টাফ হিসেবে কাজ করতে হয় হবু চিকিৎসকদের। এই অতীতে রাজ্যের একাধিক সরকারি হাসপাতালে হাউসস্টাফ হিসেবে কাজ করা বাধ্যতামূলক ছিল। তবে বর্তমানে সেই নিয়ম অনেকটাই শিথিল হয়েছে। রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার পর হাউসস্টাফ হিসেবে কাজ করা বাধ্যতামূলক নয়।
আরও পড়ুনঃ ‘শুভেন্দুর থেকে শেখা উচিত’, তৃণমূল পদ কাড়তেই বিরোধী দলনেতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ কুণাল
এদিকে এতদিন অবধি কোনও হাউসস্টাফ হিসেবে কাজ করতে হলে সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজে হবু চিকিৎসকদের অ্যাপ্লাই করতে হতো। এরপর ডাক্তারি পড়ার সময় উক্ত পড়ুয়া কত নম্বর পেয়েছেন, তার ভিত্তিতে বাছাই করা হতো। চলতি বছর রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এই পদ্ধতিতে বদল এনেছে।
বর্তমান পদ্ধতি অনুসারে, ডাক্তারি পড়াকালীন আবেদনকারীর প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ৮৫ শতাংশের স্কোরকার্ড তৈরি হবে এবং বাকি ১৫ শতাংশ নম্বর ইন্টারভিউয়ের ভিত্তিতে প্রদান করা হবে। এই ইন্টারভিউ নিয়েই আপত্তি রয়েছে অনেকের। আশঙ্কা, এই পদ্ধতি থাকলে স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতি, দুইয়ের সম্ভাবনাই বাড়বে। এই প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরসের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘ইন্টারভিউয়ের ১৫% নম্বর যোগ হওয়া নিয়ে দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, অভিযোগ আসতে শুরু করে দিয়েছে’।
এদিকে এই নতুন পদ্ধতির বিরোধিতা করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে ছাত্র সংগঠন এআইডিএসও। যদিও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগ মানতে নারাজ। এই প্রসঙ্গে আইএমএ বেঙ্গলের সম্পাদক শান্তনু সেন বলেন, ‘এই ইন্টারভিউ থাকলে একটা অনিয়মের জায়গা তৈরি হয়। সেই কারণে চোখ কান খোলা রাখতে হবে। সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য নেই। তাই কোনও প্রকার অপব্যবহার হলে চলবে না’।