“মন্দির বানানোর ‘অপরাধে’ হামলা, মালদায় ফের জেহাদিদের দ্বারা আক্রান্ত সনাতনীরা”, ভিডিও পোস্ট করে বিস্ফোরক শুভেন্দু

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের শিরোনামে মালদা (Malda)। গত মাসেই অশান্ত হয়ে উঠেছিল মালদার মোথাবাড়ি এলাকা। হিন্দুদের দোকান ভাঙচুর সহ তাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ফের হটস্পট মালদা। অভিযোগ রাতের অন্ধকারে মালদা জেলার রতুয়াতে ‘জেহাদিদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন সনাতনীরা’। এই অভিযোগ তুলে সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ নির্মীয়মাণ একটি মন্দিরকে কেন্দ্র করে এই ‘হামলা’ চালানো হয়েছে।

কী অভিযোগ বিরোধী দলনেতার? Suvendu Adhikari

গোটা ঘটনার ভিডিও পোস্ট করে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘আবারো রাতের অন্ধকারে মালদা জেলার রতুয়া তে জেহাদিদের দ্বারা আক্রান্ত হলেন সনাতনীরা। মন্দির বানানোর ‘অপরাধে’ চললো ইট বৃষ্টি। নির্বিচারে মুড়ি মুড়কির মতো পড়লো ইট। যথারীতি আক্রমণ চলাকালীন পুলিশের দেখা মেলেনি, মিলবেই বা কি করে, তখন এসে পড়লে যাদের ধরতে হতো তারা তো আবার মাননীয়ার স্নেহধন্য। আমি এই জেহাদীদের ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের মনে করিয়ে দিতে চাই, মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী শুধু মাত্র মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান বা সামসেরগঞ্জে মোতায়েন করার নির্দেশ করেননি, পশ্চিমবঙ্গের যেখানে প্রয়োজন সেখানে মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন।’

হাইকোর্টের নির্দেশের উল্লেখ করে শুভেন্দু আরও লেখেন, ‘আপাততঃ এই নির্দেশ ৩১ শে জুলাই অব্দি লাগু হলেও, মেয়াদ বৃদ্ধির সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে, এবং প্রয়োজন পড়লে তা বাড়ানো যেতে পারে ও ভবিষ্যতে উত্তপ্ত এলাকায় স্থায়ী কেন্দ্রীয় বাহিনীর ক্যাম্প রেখে দেওয়া নিয়েও আলোচনা চলছে।
তাই পুলিশ প্রশাসন তৎপর হয়ে এই ঘৃণ্য ঘটনা গুলো আটকান ও দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতার করুন, নইলে আপনাদের এই সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করার অধিকার না চলে যায় কোনো দিন।

#মমতা_ভাগাও_হিন্দু_বাঁচাও’

এখানেই শেষ নয়, ইতিমধ্যেই এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ নিয়েছেন শুভেন্দু। রবিবার পৃথক একটি পোস্ট করে বিরোধী দলনেতা সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘
গতকাল রাত্রে পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার রতুয়া’য় কিছু চরমপন্থী জেহাদি, হিন্দুদের উপর আবারও একটি পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। নির্মীয়মাণ একটি মন্দিরকে কেন্দ্র করে এই হামলা চালানো হয়। একটা বিশেষ সম্প্রদায়ের কাছে পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের ধর্মাচরণ করাটাই এখন ‘অপরাধ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে যা অত্যন্ত উদ্বেগের।’

শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘কালকের ভয়াবহ হামলায় নির্বিচারে ইঁট ও পাথর ছোঁড়া হয়, যার ফলে এলাকায় ভয় ও বিশৃঙ্খলার পরিবেশ তৈরী হয়েছে। ঘটনার সময় পুলিশ সেখানে অনুপস্থিত ছিল। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে প্রশাসনের এই উদাসীনতা অত্যন্ত উদ্বেগের।’

Suvendu Adhikari

আরও পড়ুন: অ্যাকাউন্টে ঠিকই ঢুকছিল টাকা, এবার আবাসের সেই অর্থ দ্রুত ফেরানোর নির্দেশ, বেঁধে দেওয়া হল সময়

হামলার সময়ে একাধিক দোকান ও ঘরবাড়ি লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানান বিরোধী দলনেতা। সেসবের উল্লেখ করে তিনি লেখেন,

** অশোক ঘোষ-এর মুদি দোকান ভাঙচুরের পর তা লুটপাট করা হয়েছে।

** কল্যাণ সাহা-র দোকান এবং তার দোকানে থাকা জিনিসপত্র লুট করা হয়েছে। তার বাড়ি এবং ব্যক্তিগত গাড়িটিও ভাঙচুর করা হয়েছে।

** শেখর সাহা-র দোকান এবং সেখানে থাকা নগদ টাকা লুট করা হয়েছে। পাশেই একটি সারের দোকান ছিল সেটিও লুট করা হয়েছে।

** বিনয় সাহা-র বাড়ির দরজা ইট-পাথর দিয়ে ভাঙ্গা হয়।

** ঘটনাস্থলে থাকা একটি টোটো (ই-রিকশা) সম্পূর্ণভাবে ভাঙচুর করা হয়।

** একটি স্থানীয় চায়ের দোকানও ভাঙচুর করা হয়।

শুভেন্দু জানান, ‘এই ঘটনায় আমি আমার আইনজীবীর মাধ্যমে মালদার জেলা শাসক (District Magistrate), মালদার পুলিশ সুপার (Superintendent of Police), কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের মহাপরিদর্শক (Director General), এবং রাজ্যের মুখ্য সচিব কে তথ্য সহ অবহিত করেছি এবং দ্রুত হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছি।’

ভিডিও দেখুন: https://www.facebook.com/reel/627794283620928

পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘রাজ্যে শুধু একটি সম্প্রদায়ের দ্বারা হিন্দুদের উপর বার বার এই ধরনের আক্রমণের ঘটনা দেশের সাংবিধানিক গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপক্ষতার উপর সরাসরি আঘাত হানছে। আমরা অবিলম্বে আইন-শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, দোষীদের গ্রেফতার, আক্রান্ত পরিবারগুলির সুরক্ষা এবং পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করছি।’

Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।