বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বহুদিন টালবাহানার পর নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এদিন পৌঁছে যান তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। দীর্ঘ চার ঘন্টা ধরে কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করার পরই এদিন এক নাটকীয় মোড়ের সাক্ষী থাকলো গোটা বঙ্গবাসী। সিবিআই অফিস থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন অনুব্রত মণ্ডল এবং সেই সময় তাঁকে ভিতরকার প্রসঙ্গ জিজ্ঞাসা করা হবে। সকলে যখন এহেন প্রস্তুতি নিতে শুরু করছিল, ঠিক সেই সময় সেখান থেকে বেরিয়ে সোজা এসএসকেএম হাসপাতালে যেতে দেখা যায় বীরভূমের জেলা সভাপতিকে।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগে শারীরিক পরীক্ষার জন্য অনুব্রতকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে খবর রটে যায়। এর পরেই উডবার্ন ওয়ার্ডের 211 নম্বর ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। এক্ষেত্রে তৃণমূল নেতাকে হুইলচেয়ারে করে নিয়ে যাওয়া হয়। সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী, প্রায় পৌনে তিন ঘণ্টার চেক আপ শেষে হাসপাতাল থেকে বেরোন অনুব্রত।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল নেতাদের মধ্যে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবেই পরিচিত অনুব্রত মণ্ডল। বহুদিন ধরে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা তাঁকে কলকাতার অফিসে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হলেও তা এড়িয়ে চলছিলেন অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। গত মাসে সিবিআইয়ের সমনের মুখে পড়ে বীরভূম থেকে বের হন তিনি। তবে এরপর কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার সময়ই বাধে বিপত্তি! নিজাম প্যালেসে উপস্থিত না হয়ে সোজা এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন তৃণমূল নেতা। হাসপাতালে তিন সপ্তাহ ধরে চিকিৎসা চলাকালীন একাধিক শারীরিক অসুস্থতা ধরা পড়ে তাঁর। পরবর্তীতে, এসএসকেএম থেকে ছাড়া পেলে তৎক্ষণাৎ তাঁকে পুনরায় হাজিরের নির্দেশ দেয় সিবিআই। তবে সে ক্ষেত্রেও শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তদন্তের হাত থেকে রক্ষাকবচ পান অনুব্রত।
যদিও সেই সময় অনুব্রত বলেন যে, ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি কোথাও যেতে পারবেন না। তবে 21 শে মে-র পর তিনি সিবিআই দ্বারা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রস্তুত। তবে সেই মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার দু’দিন পূর্বেই এবার নিজাম প্যালেসে সশরীরে হাজির থাকতে দেখা গেল তৃণমূল নেতাকে। সিবিআই অফিসে হাজির হওয়ার ইচ্ছা জাহির করে গতকালই মত প্রকাশ করেন অনুব্রত। এরপর এদিন সকাল 10 টায় হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হলেও তার ঠিক দশ মিনিট পূর্বেই সেখানে পৌঁছে যান তিনি। সিবিআই সূত্রে খবর, দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা জিজ্ঞাসাবাদের দরুণ তৃণমূল নেতাকে মোট 36 টি প্রশ্ন করা হয়। তবে সেই জিজ্ঞাসাবাদের পরই নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে সোজা এসএসকেএম যাত্রার পিছনে কোনো রাজনৈতিক কারণ রয়েছে কিনা, তার রহস্যভেদ করা অবশ্য এখনো সম্ভব হয়নি।