বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে রাজ্য রাজনীতির ময়দানে যে নামটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তিনি হলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay)। মঙ্গলবারই বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, গত ৩ মার্চ বিচারপতি জানিয়েছিলেন যে, ইস্তফা দিয়ে প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতির ময়দানে প্রবেশ করবেন তিনি। আর তারপর থেকেই কার্যত দেশজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছিল আলোড়ন। এমতাবস্থায়, তিনি যোগ দিয়েছেন BJP-তে। তবে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের আগেও দেশের একাধিক বিচারক তাঁদের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন। বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করব।
উল্লেখ্য যে, বিচারপতি এ এম থিপসে, বিজয় বহুগুণা, এম রামা জৈশ, রাজিন্দার সাচার হাইকোর্টের বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। পাশাপাশি রাজ্যসভার আসন দখল করেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রঙ্গনাথ মিশ্র এবং রঞ্জন গগৈ। এর পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি প্রতিমা বিবি এবং প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমও রাজ্যসভার আসন গ্রহণ করেন।
এদিকে, বিচারপতি বি আর গভাই মঙ্গলবার জানান, “আমি গত কুড়ি বছর ধরে সাংবিধানিক আদালতের বিচারক এবং আমার রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে।” উল্লেখ্য যে, তাঁর বাবা আর এস গাভই রিপাবলিকান পার্টির প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়াও, বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালার বাবা বারোরজি পারদিওয়ালা গুজরাটের বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং ১৯৯০ সালে রাজ্য বিধানসভার স্পিকার হয়েছিলেন।
এছাড়াও এই তালিকায় রয়েছে আরও বহুজন। যাঁরা রাজনীতির ময়দান থেকেও বিচারপতির আসনে আসীন ছিলেন। ১৯৯৬ সালে বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের আগে বিচারপতি এফ এই রেবেলো গোয়ায় জনতা পার্টির বিধায়ক ছিলেন। ২০১০-১১ সালে তিনি এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হন। এদিকে জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টের বিচারক হাসনাইন মাসুদি অবসর গ্রহণের পর অনন্তনাগ লোকসভা কেন্দ্রের এনসি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
পাশাপাশি, বিচারপতি আলতাব আলম CPI-এর সদস্য ছিলেন। যিনি পরবর্তীকালে দল পরিবর্তন করে কংগ্রেসে চলে আসেন। তবে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার আগে তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেন। এদিকে, বিচারপতি বাহারুল ইসলাম কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। যিনি গুয়াহাটি হাইকোর্টের বিচারপতি হওয়ার জন্য রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ করেন। আদালতের প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসর গ্রহণের পর তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হন। যদিও, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী করার জন্য তিনি ওই পদ থেকে পদত্যাগ করে ফের রাজ্যসভার সদস্য হন।
এছাড়াও, বোম্বে হাইকোর্টের কিংবদন্তি বিচারপতি এম সি চাগলা মুসলিম ন্যাশনালিস্ট পার্টি গঠন করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি বোম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে যুক্ত হন এবং ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত সেই পদে আসীন থাকেন। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের শিক্ষামন্ত্রী এবং ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতের বিদেশমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
আরও পড়ুন: ধনকুবেরদের তালিকায় বড় বদল! প্রথম স্থান হারালেন মাস্ক, বজায় থাকল আম্বানি-আদানিদের দাপট
এদিকে, ১৯৬৮ থেকে ১৯৭০ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতের প্রধান বিচারপতি ছিলেন মোহাম্মদ হিদায়াতুল্লাহ। ১৯৬৯ সালে রাষ্ট্রপতি ডক্টর জাকির হুসেনের মৃত্যুর পর তিনি অল্প সময়ের জন্য ভারতের উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এমতাবস্থায়, ১৯৭৮ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন হন এবং ১৯৭৯ সালের অগাস্ট থেকে ১৯৮৪ সালের অগাস্ট মাস পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন: ঘটি-বাটি বিক্রি হওয়ার জোগাড়! T20 বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের টিকিটের দাম পৌঁছল ১.৮৬ কোটিতে
এরপরে যাঁর প্রসঙ্গে আপনাদের জানাবো তিনি হলেন ভি আর কৃষ্ণ আইয়ার। তিনি কেরালার কমিউনিস্ট পার্টি সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি হন। উল্লেখ্য যে, এখনও পর্যন্ত আইয়ারই হলেন একটি সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পরে সুপ্রিম কোর্টে নিযুক্ত সর্বশেষ বিচারপতি।