বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরলোকগমন করেছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। অরুণ জেটলির প্রয়াণে কলম ধরলেন বিজেপির অন্যতম নেতা মুকুল রায়। দেখে নিন সেই প্রতিবেদন
“পলিটিশিয়ান ছিলেন না অরুণ জেটলি। তিনি ছিলেন স্টেটসম্যান। নিতান্ত পলিটিশিয়ান পরিচয়ের সীমানা ছাড়িয়ে তিনি উঠতে পেরেছিলেন অনেক উপরে। সবসময় স্নেহময় মানুষটির কাছে কোনও “আমরা ওরা” ছিল না। যে ব্যবহার, যে আন্তরিকতার ছোঁয়া তার দলের লোক তার থেকে পেত সেই আন্তরিকতার স্পর্শ থেকে বাদ যেত না অন্য দলের, অন্য রাজনৈতিক ধারার, ভিন্ন আদর্শের ভিন্ন রাজনৈতিক দর্শনের কোনও মানুষও। তিনি পিতৃহৃদয় সম্পন্ন একজন অগ্রজ। প্রকৃত অর্থে সুশীল, শিক্ষিত, ভদ্র একটি মানুষ।
আজ লিখতে বসে আঙ্গুল সরছেনা। চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। গলা বুজে যাচ্ছে। তার চলে যাওয়া বিজেপির কাছে অনেক বড় ক্ষতি। আর আমার নিজের কাছে…. আমার নিজের কাছে নিদারুণ ব্যক্তিগত হারানো। এ এমন হারানো যে হারানোর কোওন বিকল্প নেই। কোনও কিছু দিয়েই এই ক্ষতি পূরণ হবে না। লোকে বলে সমুদ্র সব ফিরিয়ে দেয়, জীবন সমুদ্র আর কোনদিন অরুনজিকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেবেনা। রাজনীতির পথে চলতে গিয়ে বহু মানুষের সান্নিধ্য পেয়েছি। শিখেছি।অরুনজির সান্নিধ্য আমাকে প্রবলভাবে সমৃদ্ধ করেছে।
দেখেছি একজন ডাকসাইটে আইনজীবী কিভাবে অবলীলায় অর্থমন্ত্রী দেশে ব্যাপক ভাবে অর্থময় করে তুলেছেন। সমালোচনা হয়েছে। হচ্ছে।
তবে একথা নিশ্চিত মোদি জেটলি মিলে দেশে যে অর্থনীতির নতুন দিশা এনেছেন তা দিয়ে সুদূরপ্রসারীও স্থায়ী সুফল পাবে ভারতবর্ষ।
আমার কাছে উনি ছিলেন অগ্রজ, পিতৃসম অগ্রজ। জানি এই দুনিয়ায়” অমর কে কোথা কবে “এই ভেবে মনকে শক্ত করছি। অনেক কাজ বাকি। নতুন ভারত গড়ার কাজে আমিও একজন সামান্য সৈনিক। নয়া দিল্লীতে বসে অনেক কথা মনে পড়ছে। অরুনজির সঙ্গে প্রথম আলাপের কথা, তার সঙ্গে অনেক আড্ডার কথা। তার সঙ্গে যে কোনোও আড্ডাই শিক্ষনীয়।
জানি এইসব আড্ডা আর ফিরবেনা। রবীন্দ্রনাথ উদ্ধৃত করে এইটুকু প্রার্থনা
“রাত্রিদিন ধুকধুক/ তরঙ্গিত দুখ-সুখ /থামিআছে বুকে /বলো শান্তি বলো শান্তি /দেহ সাথে সব ক্লান্তি /হয়ে যাক ছাই।”
ভালো থাকুন অরুনজি, খুব ভালো থাকুন।”