পিছিয়ে থেকেও সবার সেরা মামা! এই পাঁচ কারণেই লাগাতার চতুর্থবার মধ্যপ্রদেশে গেরুয়া সুনামি

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মধ্যপ্রদেশে (Madhya Pradesh ) গেরুয়া ঝড়! এককথায় সুনামি। বিজেপি (Bharatiya Janata Party) কেবল ক্ষমতায় আসছে তেমনটা না, দুই-তৃতীয়াংশ আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে তারা। তবে যেই জিনিসটা অবাক করছে তা হল এবারের নির্বাচনের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য কোনও মুখ ঘোষণা করেনি। তাহলে কি করে হল এমন চমৎকার? মোদী ম্যাজিক ছাড়াও সামনে উঠে আসছে বেশ কয়েকটি কারণ।

খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছেন মহিলারা! মধ্যপ্রদেশে ভোটের পরিসংখ্যান বেরিয়ে এলে কংগ্রেসের তরফে বলা হয়, ফলাফল কার পক্ষে যাচ্ছে তা এখন স্পষ্ট। অন্যদিকে বিজেপি নেতাদের কথা ছিল, কংগ্রেসের লোকেরা ভুলে গেছে যে মহিলারা প্রকাশ্যে ভোট দিয়েছেন। ঘর থেকে বের হওয়া নারীরাই ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছে যে ফলাফল কার পক্ষে যাচ্ছে।

ওদিকে বিধানসভা ভোটের এই ফলাফল মোটামুটি স্পষ্ট হতেই সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মহিলাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান (Shivraj Singh Chauhans)। তিনি বলেন, ‘লাডলি বহেনাদের’ ধন্যবাদ। ফের একবার বিজেপিকে তারাই জয়ী করেছে।

বিধানসভা ভোটের আগে মধ্যপ্রদেশে মহিলাদের জন্য ‘লাডলি বহেনা’ প্রকল্প চালু করেছিলেন শিবরাজ সিং চৌহান। প্রথমে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মহিলাদের মাসে ১ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে বিজেপি। পরে গত অগস্ট মাসে সেই অনুদানের পরিমাণ ১২৫০ টাকা করা হয়।

পাশাপাশি ফের ক্ষমতায় ফিরলে এই অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়ে মাসে ৩ হাজার টাকা করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মধ্যপ্রদেশে মোট ২.৭ কোটি মহিলা ভোটার রয়েছেন। শিবরাজের মতে, এই মহিলারাই তাদের জিতিয়েছেন। দু’হাত তুলে তাকে ভোট দিয়েছেন।

bjp procession sixteen nine

শিবরাজের ম্যাজিক! যদিও বিজেপি এবার শিবরাজ সিং চৌহানকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে উপস্থাপন করেনি। কিন্তু নির্বাচনের ঠিক আগে, প্রধানমন্ত্রী মোদি একটি চিঠিতে লিখেছিলেন যে শিবরাজ সিং যেভাবে পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়ন করেছেন তার ফলাফল স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। মধ্যপ্রদেশেও স্লোগান উঠেছে যে মামার কাজ এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীর পরিষ্কার ছবি ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে।

আরও পড়ুন: দারুণ খবর! এবার সরকারি কর্মচারীদের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ২ লাখ টাকা, কবে? জেনে নিন

মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে এবারের একদম অন্যরকম পরীক্ষা করল বিজেপি। নির্বাচনের ময়দানে বিজেপির বহু প্রবীণ নেতারা ছিলেন। বহু সাংসদদেরও সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বার্তা ছিল যে বিজেপির জন্য নির্বাচনে জয়ী হওয়াই একমাত্র মিশন নয়, জনসাধারণের উন্নতির জন্য, অবস্থান কোনও ব্যক্তির কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। বিজেপিও এই অভিনব পরীক্ষাটিও ভোট ব্যাংকে দারুন কাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ সব ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন স্বয়ং কমাণ্ড হাতে নেন, তখন বিজেপির পথ আরও মসৃন হয়ে যায়। নির্বাচনের প্রবণতা থেকেই এটাই স্পষ্ট যে রাজ্যের মানুষ প্রধানমন্ত্রী মোদী এই নামটার প্রতি কতটা বিশ্বাসী। প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজের কথায় সর্বদা বুঝিয়েছেন সমাজের দুর্বল শ্রেণীর কল্যাণ তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বঞ্চিত মানুষকে মূল স্রোতে সম্পৃক্ত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় রত তিনি।

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে কংগ্রেসের নেতিবাচক প্রচারণার প্রভাব পড়েছে ভোট বাক্সে। কংগ্রেস এখনও ১০০ আসনের নীচে। যা ২০১৮ সালের সাথে তুলনা করলে লজ্জাজনকই বটে। এই প্রবণতাগুলি থেকে এটি একেবারেই স্পষ্ট যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপর সরাসরি আক্রমণ এবং শিবরাজ সিং চৌহান সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের নেতিবাচক কথাবার্তা জনগণ পছন্দ করেনি এবং ভোটাররা ইতিবাচক নির্বাচনী প্রচারকে অধিক গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর