বাংলাহান্ট ডেস্ক: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য সুখবর! অবশেষে সাধারণের জন্য খুলে যেতে চলেছে বহু প্রতীক্ষিত অযোধ্যার রামমন্দির (Ayodhya Ram Mandir)। তবে এখনই নয়। এর জন্য আর মাত্র দু’বছর অপেক্ষা করতে হবে। তারপরেই সকলে দর্শন করতে পারবেন তাঁদের প্রিয় রামলালার। আপাতত নির্মীয়মাণ অবস্থায় রয়েছে মন্দিরটি। সেখানে রামলালার মূর্তি স্থাপন করার পরেই খুলে দেওয়া হবে মন্দিরের দরজা।
রামমন্দির ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই জানিয়েছেন, ২০২৪-এর জানুয়ারির মধ্যেই ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে অযোধ্যার রামমন্দিরের। শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্টের তরফে জানানো হয়েছে, মন্দিরের অর্ধেক কাজই শেষ হয়ে গিয়েছে। কাজের গতিতে ট্রাস সন্তুষ্ট বলেও জানিয়েছেন সদস্যরা। ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত বলেন, “ভক্তরা যাতে রামলালার দর্শন করতে পারেন, সেজন্য ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকেই খুলে দেওয়া হবে মন্দিরের দরজা।”
তিনি আরও বলেন, “মন্দির খোলার আগে মূল কাজ রামলালার মূর্তি মূল মন্দিরে স্থাপন করা। মকর সংক্রান্তির দিন রামলালার মূর্তি স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে।’’ আগামী বছর ডিসেম্বরের মধ্যে মন্দিরের প্রথম তল পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে বলে জানিয়েছন চম্পত। ২০২৪-এর ১৪ জানুয়ারি রামলালার মূর্তি স্থাপিত হবে মূল মন্দিরে।
কত খরচ হচ্ছে মন্দির তৈরিতে? চম্পত এদিন বলেন, “পুরো রামমন্দিরটি তৈরি করার জন্য ১৮০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে মন্দির চত্বরে আরও একাধিক দেবদেবীর মূর্তি ও মন্দির থাকবে। ২০২০ সালের ৫ অগস্ট অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপর থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়ে যায় মন্দির নির্মাণের কাজ। সেই সময় জানানো হয়েছিল, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতেই কাজ শেষ করে খুলে দেওয়া হবে মন্দিরের দরজা।
প্রসঙ্গত, রামমন্দিরের ভূমিপূজো করে ৪০ কিলোগ্রাম ওজনের ইট গেঁথে মন্দিরের শিলান্যাস করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ২০২২ সালের জুনে রামমন্দিরের গর্ভগৃহে প্রথম পাথরটি গাঁথেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ‘শিলাপূজন’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, “৫০০ বছরের সংগ্রাম সফল হল। শীঘ্রই অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হবে।’’ জানা গিয়েছে, মন্দিরের দেওয়ালে রাজস্থানের গোলাপি রঙের বেলেপাথর বসানো হবে। মন্দির ট্রাস্ট সূত্রে খবর, কর্নাটক থেকে গ্রানাইট আনা হয়েছে। অন্যদিকে মিরজাপুর থেকেও বেলেপাথর আনা হয়েছে।
তবে এখানেই শেষ নয়। মন্দিরের সৌন্দর্যায়নের কাজের জন্য রাজস্থান থেকে মার্বেল পাথর আনা হয়েছে। রাজস্থানের বনশি পাহাড়পুর থেকে এক লক্ষ ঘন ফুট শ্বেতপাথর এসেছে অযোধ্যায়। রাজস্থানের মাকরানা পাহাড় থেকে আনা বিশেষ সাদা মার্বেল বসবে মন্দিরের গর্ভগৃহে। রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের তরফে এই তথ্য জানানো হয়েছে। অযোধ্যার রামমন্দির নির্মাণের এই কাজ করছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো। গোটা প্রক্রিয়া নজরদারির কাজে রয়েছে টাটা কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স।
এ ছাড়াও একাধিক বিশ্ববিখ্যাত নির্মাণ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া চলছে এই কাজে। মোট ১১০ একর জমিতে ছড়ানো মন্দির নির্মাণের জন্য ৯০০ থেকে এক হাজার কোটি টাকা খরচের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। মন্দির চত্বরে থাকবে একটি জাদুঘর, একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং একটি আর্কাইভ। জানা গিয়েছে, মূল মন্দিরকে ঘিরে থাকবে আরও ছ’টি মন্দির।
এই মন্দিরগুলো হল ব্রহ্মামন্দির, সূর্যমন্দির, গণেশমন্দির, শিবমন্দির, বিষ্ণুমন্দির এবং দুর্গামন্দির। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগেই রামমন্দিরের দরজা ভক্তদের জনু খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চম্পত রাই। মন্দিরটি যে সময় খুলে দেওয়া হবে, রাজনৈতিক দিক থেকেও এই সময়কাল বেশ গুরুত্বপূর্ণ।