বাংলাহান্ট ডেস্ক: তিনি চলে গিয়েছেন আগেই। এবার বাপ্পি লাহিড়ীর (Bappi Lahiri) নশ্বর দেহের শেষ চিহ্ন টুকুও ভেসে গেল গঙ্গার বুকে। বাবার নির্দেশ মেনে গঙ্গার বুকে অস্থি ভস্ম বিসর্জন করলেন ছেলে বাপ্পা (Bappa Lahiri)। মৃত্যুর আগে ছেলেকে এমনটাই নাকি বলে গিয়েছিলেন গায়ক সুরকার। বাবার সে আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন বাপ্পা।
মুম্বইতে বাস হলেও আদ্যোপান্ত বাঙালি ছিলেন অলোকেশ লাহিড়ী ওরফে বাপ্পি লাহিড়ী। তাই মৃত্যুর পর ফের নিজের প্রাণের কলকাতার কাছেই ফিরতে চেয়েছিলেন। বাপ্পিদার ইচ্ছা ছিল, পারিবারিক প্রথা মেনে তাঁর অস্থিও বিসর্জন করা হোক গঙ্গাতেই। বাবার শেষ ইচ্ছা ভোলেননি ছেলে।
মুম্বইতে শেষকৃত্য, স্মরণসভা হলেও বাবার অস্থি নিয়ে সোজা কলকাতা উড়ে আসেন তিনি। আউট্রাম ঘাটে গঙ্গার জলে বিলীন হয়ে গেলেন বাংলার ছেলে বাপ্পি লাহিড়ী। ছেলে বাপ্পা জানান, তাঁদের পরিবারের প্রথা এটা। তাঁর ঠাকুরদা ঠাকুমার শেষকৃত্যও হয়েছিল কলকাতাতেই। বাঙালি হিসাবে তাঁরা সকলেই গর্বিত। তাই বাপ্পি লাহিড়ীরও ইচ্ছা ছিল গঙ্গাবক্ষেই তাঁর অস্থি ভাসানো হোক। বাপ্পা জানান, বাবাকে ছাড়া এই প্রথম বার কলকাতায় এলেন তিনি।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হন বাপ্পি লাহিড়ী। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছিল, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (Obstructive Sleep Apnea) অর্থাৎ ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা জনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে সুরকার গায়কের। কিন্তু ছেলে বাপ্পা লাহিড়ীর বক্তব্য অন্য রকম। তিনি বিশ্বাস করেন না, শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় মৃত্যু হয়েছে বর্ষীয়ান গায়কের।
সংবাদ মাধ্যমকে বাপ্পা বলেন, গোটা জানুয়ারি মাসটাই হাসপাতালে কাটিয়েছেন বাপ্পি দা। কিন্তু ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি হঠাৎ করে বাড়ি ফিরতে চান। তার পরদিনই আচমকা খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেন বাপ্পি লাহিড়ী। সন্ধ্যাবেলায় পরিস্থিতি আরো আশঙ্কা জনক হয়ে উঠলে পরিবারের সদস্যরা ঠিক করেন ফের তাঁকে হাসপাতালেই নিয়ে যাওয়া হবে।
হাসপাতালে নিয়ে গেলে মধ্যরাতের কিছু আগে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাপ্পি দা। কিন্তু চিকিৎসকদের দাবির সঙ্গে সুরকারের ছেলে সহমত নন। বাপ্পার কথায়, “ওটা শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল না। আমার মনে হয় বাবার হৃদযন্ত্র হঠাৎ করেই স্তব্ধ হয়ে যায়। আমার মা, দিদি, জামাইবাবু বাবাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসক ফোন করেই বলেছিলেন তাঁকে আবারো হাসপাতালে নিয়ে যেতে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।”