চরম দারিদ্রতা, বাধ্য হয়ে স্কুল না গিয়ে ভিক্ষা! দুই নাবালকের দায়িত্ব নিয়ে নজির সৃষ্টি ভাতার থানার ওসির

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভাতার থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রসেনজিৎ দত্ত একদিন সকালে বাজারে গিয়েছিলেন। বাজারে গিয়ে দেখেন দুই নাবালক ভাই হাত পেতে ভিক্ষা করছে। যে সময়টা তাদের স্কুলে থাকার কথা সেই সময় এভাবে ভিক্ষা করার কারণ জানতে প্রসেনজিৎ দত্ত তাদের কাছে যান। গিয়ে তিনি জানতে পারেন ভিক্ষা না করলে তাদের সংসার চলবে না।

তাই তাদের মা স্কুলে না পাঠিয়ে তাদের বাজারে পাঠিয়েছে ভিক্ষা করতে। এই ঘটনা শোনার পর আর নিজেকে সামলাতে পারেননি ভাতার থানার ভারপ্রাপ্ত এই আধিকারিক। এই নাবালক ভাইকে নিয়ে তাদের বাড়ি যান প্রসেনজিত বাবু। সেখানে গিয়ে নিজের চোখে দেখেন পরিস্থিতি। তিনি জানান এবার থেকে দুই ভাইয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব তিনি নিলেন।

আরোও পড়ুন : সামনেই টানা ৪ দিনের ছুটি! দিনক্ষণ জেনে ঠিক করে ফেলুন বেড়ানোর প্ল্যান

এবার থেকে রোজ স্কুলে যাবে এই দুই ভাই। প্রসেনজিৎ দত্তের এই কাজে বেজায় খুশি ভাতারের বলগোনা অঞ্চলের বাসিন্দারা। জেলা পুলিশ সুপার আমন দীপও এই কাজের প্রশংসা করেছেন। প্রসেনজিৎ দত্ত পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার ওসি। দুই নাবালক ভাইয়ের সাথে বুধবার সকালে তার দেখা হয় বলগোনা বাজারে। গাড়ি থেকে নেমে প্রসেনজিৎ তাদের নাম জিজ্ঞাসা করেন।

আরোও পড়ুন : অ্যাকশন গ্রাউন্ড জিরোয়! এবার সন্দেশখালি যাচ্ছেন অভিষেক, হবে বিরাট সভা

নাবালক ভাইয়েরা জানায় তাদের নাম ইসমাইল শেখ ও আশরাফিল শেখ। এছাড়াও এই দুই ভাই বলে, সন্তোষপুর গ্রামে তাদের বাড়ি। শারীরিকভাবে অক্ষম তাদের বাবা। কাজকর্ম করতে পারেন না। কাঁথা সেলাইয়ের কাজ করেন মা। ওই সামান্য আয়ে সংসার চলে না। সেখানে পড়াশোনা চালানো কল্পনার সমান। তাই বাধ্য হয়ে ভিক্ষা করতে হচ্ছে তাদের।

সব কথা শুনে প্রসেনজিত বাবু ওই নাবালকের বাড়ি যান। বাড়ি যাওয়ার সময় মুদিখানা থেকে কিছু জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যান তিনি। সেখানে গিয়ে ওই নাবালক ভাইদের মা চম্পা বিবির সাথে কথা বলেন তিনি। সেখানেই এই দুই ভাইয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেন প্রসেনজিৎ বাবু। পাশাপাশি তিনি আশ্বাস দেন যাতে ওই নাবালকদের মায়ের কিছু বাড়তি রোজগার হয় সেই দিকটা দেখার।

4e3a41bf 8875 4678 96b2 995ead2dbfe7 1080x570

চম্পা বিবি জানান, ‘‘লোকলজ্জার মাথা খেয়ে ছেলেগুলোকে ওই কাজে নামিয়েছিলাম। বড়বাবু (প্রসেনজিৎ) যে আশ্বাস দিয়ে গেলেন তাতে ওদের আর ওই কাজে পাঠাব না। পড়াশোনা করাব।’’জানা গেছে প্রসেনজিৎ দত্ত এই ধরনের কাজ মাঝে মধ্যেই করে থাকেন। এলাকার বাসিন্দারা এখন প্রশংসায় পঞ্চমুখ ওসির। জেলা পুলিশ সুপার বলছেন, ‘‘এ কাজ শুধু পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে উদ্বুদ্ধ করবে না, সকলকেই উৎসাহিত করবে।’’

Avatar
Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর