বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পয়গম্বর ইসুতে প্রাক্তন বিজেপি (BJP) মুখপাত্র নূপুর শর্মার (Nupur Sharma) বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে এখনো পর্যন্ত সরগরম হয়ে রয়েছে দেশের পরিস্থিতি। ঘটনার পর বহুদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত এর প্রভাবে হিংসার ঘটনা অব্যাহত আর এবার সেই ধারা বজায় রেখে বিহারে (Bihar) এক যুবককে ছুরি দিয়ে নৃশংস ভাবে আঘাত করার অভিযোগ উঠেছে। নূপুর শর্মার ভিডিও দেখার অপরাধে তার সঙ্গে এহেন কাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও এই প্রসঙ্গে পুলিশের গলায় শোনা গিয়েছে ভিন্ন সুর।
ঘটনার কেন্দ্রস্থল বিহারের সীতামারহি জেলা। গত রবিবার এলাকায় এক তেইশ বছর বয়সী যুবক চায়ের দোকানে বসে নূপুর শর্মার ভিডিও দেখে চলেছিল। অভিযোগ, সেই সময় তার ওপর আচমকা হামলা করে কয়েকজন যুবক এবং পরবর্তীতে তাকে ছুরি দিয়ে বারংবার আঘাত করা হয়। ইতিমধ্যে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে পুলিশের মতে, এই ঘটনার সঙ্গে নূপুর শর্মার বিতর্কের কোনোরকম যোগসূত্র নেই।
অঙ্কিত কুমার ঝাঁ নামে আক্রান্ত যুবক বর্তমানে কিছুটা সুস্থ রয়েছে বলে খবর। গত রবিবার অঙ্কিত পাড়ার একটি চায়ের দোকানে বসে মোবাইলে নূপুর শর্মার ভিডিও দেখে চলেছিল। অভিযোগ, এর পরেই কয়েকজন যুবক আচমকা তার ওপর হামলা চালায়। প্রথমে মারধর এবং পরবর্তীতে ছুরি দিয়ে পরপর ৬ বার আঘাত করা হয় তাকে। পরবর্তীতে রক্তাক্ত অবস্থায় আক্রান্ত যুবককে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপরেই গোরা, নেহাল, হেলাল এবং বেহাল নামে চার যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পরবর্তীতে অঙ্কিত জানায়, “আমি চায়ের দোকানে বসে নূপুর শর্মার একটি ভিডিও দেখছিলাম। আচমকা সেখানে কয়েকজন যুবক এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করে, ‘তুমি কি নুপুর শর্মাকে সমর্থন করো?’, এর উত্তরে আমি সম্মতি জানালে আচমকা আমাকে মারধর শুরু করে তারা। পরবর্তীতে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়।” এই ঘটনা প্রসঙ্গে অঙ্কিতের বাবা জানান, “কেবলমাত্র নূপুর শর্মাকে সমর্থন করার জন্যই আমার ছেলের ওপর নৃশংসভাবে হামলা চালিয়েছে অভিযুক্তরা। তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”
উল্লেখ্য, এই ঘটনায় ইতিমধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে প্রশাসনের গলায় শোনা গিয়েছে ভিন্ন সুর। ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় থানার ইনচার্জ বিজয় কুমারের দাবি, “অঙ্কিত এবং অভিযুক্ত যুবকরা ধূমপান করার পাশাপাশি গুটখা খাবার জন্য মিলিত হয়। এরপরই তাদের মধ্যে কোনও এক ‘অজানা’ কারণে বিবাদ শুরু হয় এবং পরবর্তীতে গোরা নামে এক যুবক ছুরি দিয়ে আঘাত করে অঙ্কিতকে।” এক্ষেত্রে নূপুর শর্মার সঙ্গে ঘটনার কোনরকম যোগ নেই বলেই মত পুলিশের।
যদিও এই ঘটনার পিছনে আসল কারণ কি, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে নূপুর শর্মাকে সমর্থনের কারণে অতীতেও হিংসার ঘটনা ঘটে। রাজস্থানে কানহাইয়া নামে এক ব্যক্তিকে মুণ্ডচ্ছেদ করে খুন করা হোক কিংবা এক অধ্যাপককে নৃশংসভাবে খুন, নূপুর শর্মা বিতর্কে দেশের পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিহার থেকে উঠে আসা এই ঘটনায় চাঞ্চল্য আরো বৃদ্ধি করবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।