সমাজবাদী পার্টির নেতা হিসেবে পরিচিত ৮ জন পুলিশকর্মীকে হত্যাকারী বিকাশ দুবে, নির্বাচনেও দাঁড়িয়েছিল তার স্ত্রী

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ উত্তর প্রদেশের কানপুরে (Kanpur Encounter) কুখ্যাত দুষ্কৃতীকে ধরতে গয়ে আট জন পুলিশ কর্মী শহীদ হন। এই ঘটনার পর যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) অ্যাকশনে এসেছেন।

উত্তর প্রদেশে, এটি মাফিয়া, গুন্ডা, ধর্ষক, মারোডার, অপরাধী, কোথাও এর যোগসূত্রটি সমাজবাদী পার্টি থেকে বেরিয়ে আসে। কানপুরে ৮ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডটি তার সহকর্মীদের সাথে বিকাশ দুবে নামে এক অপরাধী ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

1 54

পুলিশ দলে এই অপরাধীরা ছাদ থেকে গুলি চালিয়েছিল, এতে ডিএসপি-সহ ৮ জন পুলিশ সদস্য ডিউটিরত ছিলেন। বিকাশ দুবেই পলাতক রয়েছে। জানা গিয়েছে বিকাশ দুবে তিনি সমাজবাদী পার্টির নেতা। বিকাশ দুবে সমাজবাদী পার্টির সাথে যুক্ত এবং তাঁর স্ত্রী রিচা দুবেও সমাজবাদী পার্টির টিকিটে জেলা পঞ্চায়েতের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ‘পাতাললোক’-এর বেতাজ বাদশা বিকাশ, যার মাথার উপর ঝুলছে ৬০-টিরও বেশি মামলা। ভয়াবহ এই হত্যাকাণ্ডের পর যোগীর রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

১৯৯০ থেকে অপরাধে হাতেখড়ি বিকাশের। তার পর যত সময় গড়িয়েছে ততই তার অপরাধের পাল্লা ভারী হয়ে উঠেছে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে খুন, ডাকাতি, অপহরণ, পণবন্দি করা, দাঙ্গা বাধানোর মতো একের পর এক অভিযোগ। খুনের দায়ে জেল খাটতেও হয়েছে বিকাশকে। লখনউ থেকে ১৫০ কিমি দূরে কানপুরের বিকরু গ্রামে তার জন্ম। যুবক বয়সে অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে বিকাশ। তার পর অপরাধের একের পর এক ‘মাইলস্টোন’ পেরিয়ে গিয়েছে বিকাশ দুবে।

ঠান্ডা মাথার খুনি বিকাশ। ২০০০ সালে তারাচাঁদ ইন্টার কলেজের প্রিন্সিপাল সিদ্ধেশ্বর পাণ্ডেকে খুন করে সে। ২০০১-এ তার বিরুদ্ধে সন্তোষ শুক্ল নামে এক বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রীকে খুনের অভিযোগ ওঠে। সে খুনের ঘটনাও ছিল রোমহর্ষক। সন্তোষকে তাড়া করেছিল বিকাশ। প্রাণভয়ে সন্তোষ আশ্রয় নেন শিবলি থানায়। কিন্তু তাতেও রেহাই মেলেনি। থানায় ঢুকে সন্তোষকে গুলি করে খুন করে বিকাশ।

23

ওই হামলায় দুই পুলিশ কর্মীরও মৃত্যু হয়। এই হাই প্রোফাইল খুনের পর থেকেই অপরাধ জগতে বিকাশের রমরমা বাড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি এমন হয় যে বিকাশের বিরুদ্ধে আঙুল তুলতে সাহস পাননি কেউই। বিকাশ পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। প্রকাশ্যে থানার মধ্যে খুন করেও প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যায় সে। জানা গিয়েছে, সেই সময় জনতা দলের বিধায়ক হরিকিষণ শ্রীবাস্তবের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল বিকাশ। হরিকিষণের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিজেপি নেতা সন্তোষ শুক্ল।

২০০২ সালে মায়াবতী মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বহুজন সমাজ পার্টিতে যোগ দেয় বিকাশ। তার নেতৃত্বেই কানপুরের বিলহারম, শিবরাজপুরী, রানিয়ার মতো এলাকা হয়ে উঠেছিল অপরাধীদের মুক্তাঞ্চল। তৎকালীন শাসকদলেরও প্রয়োজন ছিল এমনই এক বাহুবলীর। জেলে বসেই শিবরাজপুরী এলাকা থেকে পঞ্চায়েত ভোটেও জেতে বিকাশ।


সম্পর্কিত খবর