বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) থেকে শুরু করে প্রাথমিক টেট (Primary Tet) এবং অন্যান্য একাধিক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে ইতিমধ্যে চাকরি হারিয়েছেন বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা। ভবিষ্যতে আরো অনেকেরই চাকরি খাওয়ানোর সম্ভাবনা। আদালতের তরফ থেকে ইতিমধ্যে ঘুষ দিয়ে চাকরি প্রাপকদের কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে আর এবার ওই সকল যুবক-যুবতীদের পাশে দাঁড়ালেন আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharya)। তাদের সকলকে ‘প্রতারণার শিকার’ বলে আখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি সহায়তা করার আশ্বাসও দেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে এসএসসি থেকে প্রাথমিক টেট, গ্রুপ ডি থেকে অন্যান্য একাধিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মন্ত্রীদের পাশাপাশি শিক্ষা আধিকারিকরা অস্বস্তিতে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য, অশোক সাহার মত অনেকেই হেফাজতে। এই পরিস্থিতিতে তাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিলেও বর্তমানে ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়া যুবক-যুবতীদের পাশেই দাঁড়িয়েছেন বিকাশবাবু।
একটি সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষক ও শিক্ষিকারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তারা অভিযোগ করার পাশাপাশি যদি আমার কাছে সাহায্যের জন্য আসে, তাহলে আমি সহায়তা করব। ওরা প্রতারণার শিকার হয়েছে। ফলে ওদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য একাধিক পথ খোলা রয়েছে, তা অবলম্বন করা প্রয়োজন।”
পাশাপাশি ঘুষ দেওয়া এবং ঘুষ নেওয়াকে একই সারিতে ফেলতে নারাজ বিকাশবাবু। বিশিষ্ট এই আইনজীবী বলেন, “কাজের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হল সরকারের কর্তব্য। তারা তা করতে সক্ষম হয়নি। সেই কারণে একটা বেকার ছেলে তার পরিবারকে রক্ষা করার স্বার্থে ঘুষ দিয়েছে। এক্ষেত্রে তাদেরকে লোভ দেখানো হয়েছিল যে, টাকা দিলে তবেই চাকরি পাবে। তাই ঘুষ দেওয়া এবং ঘুষ নেওয়াকে একই সারিতে ফেলা উচিত নয়।”
একইসঙ্গে তিনি বলেন, “কোন ক্ষুধার্ত অসহায় মানুষকে যদি কাজের পরিবর্তে খাবার দেওয়ার কথা বলা হয়, তাহলে সে সেটা করবে। এটা কোন অপরাধ বলে মনে করি না। যারা চাকরি দেওয়ার জন্য টাকা নিয়েছে, তারা সবচেয়ে বড় অপরাধী। তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত, যা দেখে মানুষ ভয় পাবে।”
বিকাশবাবুর এহেন মন্তব্যের জেরে ইতিমধ্যে শোরগোল পড়ে গেছে সর্বত্র। এই প্রসঙ্গে এদিন এক এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থী বলেন, “উনি একজন আইনজীবী। টাকা দিয়ে চাকরি প্রদান করা ব্যক্তিদের মুখোশ খোলার জন্য যদি উনি বরখাস্ত শিক্ষকদের সাহায্য নেওয়ার কথা মনে করেন, তবে তার অধিকার রয়েছে। তবে আমরা আবেদন করব, বঞ্চিত চাকরিরপ্রার্থীদের জন্য যেন উনি আদালতে সওয়াল করেন।”