তৃণমূলকে নিয়ে ধর্ম সঙ্কটে CPM, পঞ্চায়েতের আগে শেষমেষ মমতারই পাশে! দলের অন্দরে ‘পটনা-সঙ্কট’

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বঙ্গের দুয়ারে পঞ্চায়েত নির্বাচন। অন্যদিকে বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। একদিকে যখন জাতীয় স্তরে বিজেপি তথা মোদী সরকারকে রুখতে বিরোধীদের মধ্যে চলছে আলোচনা বৈঠক। অন্যদিকে বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) সঙ্গে সরাসরি লড়াই। মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাহুল গান্ধী, সীতারামদের ছবি দেখিয়ে প্রচারও শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। বলা হচ্ছে জাতীয় এবং রাজ্য স্তরে এরা সব পরস্পরের ‘বি টিম’! সব মিলিয়ে সংকটে এখন সিপিএম (CPM)।

জোটের শক্তি বৃদ্ধির জন্য তৃণমূলের হাত ধরতে কী রাজি সিপিএম! কারণ কান্নুরে সিপিএমের গত পার্টি কংগ্রেসের সময় দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট সাফ জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের তথা শাসকদলের কাজকর্ম দেখে কোনও ভাবেই ঘাসফুলকে তারা ‘গণতান্ত্রিক শক্তি’ বলে মনে করেন না। এবার সেই তুলে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে যে বিজেপির ‘স্বৈরতন্ত্র’ রুখতে আর একটা ‘স্বৈরাচারী’ দলের হাত ধরে লাভ কী!

আর এই নিয়েই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বা বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মুখে বিরোধীদের খোঁচা দিয়ে শোনা যাচ্ছে, ‘বাংলায় কুস্তি, দিল্লিতে দোস্তি’! যদিও এই প্রসঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরির বক্তব্য, ‘‘দেশের গণতান্ত্রিক চরিত্রই বদলে দিচ্ছে বিজেপি। দেশ বাঁচানোর লড়াই আমাদের সকলেরই কর্তব্য।’’ শীর্ষ নেতৃত্বের কথায়, এখানে হাত ধরার প্রশ্ন নেই। প্রশ্নটা হচ্ছে নীতির। অন্যদিকে সুরে সুর মিলিয়েছে মমতাও। তার কথায়, ‘‘বিজেপি আবার ক্ষমতায় এলে নির্বাচন হতেই দেবে না! তখন আর কে কোথায় লড়বে, সে সব কথা বলার জায়গা থাকবে না।’’

তবে জাতীয় স্তরে আর রাজ্যের পরিস্থিতি কী এক! কারণ ওদিকে মমতার কথায়, জাতীয় স্তরে যা ঠিক হবে, রাজ্যেও তা সকলের মেনে চলা উচিত। রাজ্যেও লড়াইয়ের ক্ষেতে ইতি টানতে হবে। আর এখানেই আসছে ভিন্নমত। তৃণমূল নেত্রীর এই সূত্রে কংগ্রেস, সিপিএম কেউই রাজি নয়। বাংলায় বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব শক্তিকে একজোট করেই তাদের লড়াই চলবে বলে সাফ ইঙ্গিত।

opposition parties meet

এই প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘‘কোনও জোট বা ফ্রন্টের প্রশ্নই আসছে না। গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে রক্ষা করতে, মানুষের জীবন ও জীবিকা বাঁচাতে দেশ জুড়ে যে প্রচার ও লড়াই করা জরুরি তাই করা হচ্ছে।’’

অন্যদিকে সূত্রের খবর, পটনা থেকে দিল্লি ফিরে শনিবার দলের পলিটব্যুরো বৈঠকেও ইয়েচুরি বিরোধী-বৈঠকের মূল বক্তব্য বাখ্যা করেছেন। সিপিএম সূত্রের মতে, কোথায় কে কত আসনে লড়বে, সেটা বিরোধী দলগুলির নিজস্ব সমীকরণের ব্যাপার। তবে শেষে মানুষ যাতে একজোটে বিজেপিকে সরিয়ে তাদের বেছে নেন, তার জন্যই বৃহত্তর আন্দোলন করতে হবে। ইয়েচুরি পটনার বৈঠকে এই কথাই তুলে ধরেছেন।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর