বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাঙালির সাথে ব্রিটানিয়া (Britannia Industries) কোম্পানির সখ্যতা বহু প্রাচীন। ঘরে ঘরে ব্রিটানিয়া কোম্পানির বিস্কুট যথেষ্ট জনপ্রিয় বহুকাল থেকেই। কলকাতার একটি ছোট্ট ঘর থেকে ব্যবসা শুরু ব্রিটানিয়ার। সেই ছোট্ট বিস্কুট কোম্পানির আজ হাজার হাজার কোটি টাকার টার্নওভার। দেশের পাশাপাশি গোটা বিশ্বেই খাদ্যপণ্যের ব্যবসায় শীর্ষস্থান দখল করে নিয়েছে ব্রিটানিয়া।
মাত্র ২৯৫ টাকা পুঁজি নিয়ে ১৮৯২ সালে পথ চলা শুরু ব্রিটানিয়ার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটানিয়ার ব্যবসা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। আজ প্রায় প্রতিটা বাড়িতেই ব্রিটনিয়ার বিস্কুট, টোস্ট, পাউরুটি বা কেকের দেখা মেলে। বিশ্ব বিখ্যাত এই কোম্পানি স্থাপন করেন কিছু ব্রিটিশ। বর্তমানে এই সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে ওয়াদিয়া পরিবারের হাতে।
আরোও পড়ুন : বাজারের ব্যাগে করে বাচ্চা চুরি? দত্তপুকুর লোকালে হাতেনাতে ধরা পড়লেন মহিলা! ভাইরাল ভিডিও
আজ যে কোম্পানি সারা বিশ্ব নিজের প্রভাব বিস্তার করেছে, সেই কোম্পানির পথ চলা শুরু কলকাতার একটি ছোট্ট ঘরে। মূলত দুই বাঙালি ভাইয়ের বুদ্ধিতেই একটা সময় গোটা বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করে ব্রিটানিয়া। তবে আচমকাই ব্রিটানিয়া কোম্পানির তারাতলা ইউনিটে ঝুলিয়ে দেওয়া হল তালা। কর্মহীন হয়ে পড়লেন ১২২ জন স্থায়ী ও ২৫০ জন অস্থায়ী কর্মী।
আরোও পড়ুন : TET-র প্রশ্ন ভুল মামলায় নয়া মোড়! কী রায় দিল কলকাতা হাই কোর্ট?
১৮৯২ সালে কলকাতায় স্থাপিত হয় ব্রিটানিয়া কোম্পানি। তখন একটি ছোট্ট ঘরে দেশীয় পদ্ধতিতে বিস্কুট তৈরি করা হত। এই কাজ মূলত হত নলীন চন্দ্র গুপ্ত ভিএস ব্রাদার্স নামে উদ্যোগে। তারপর ১৯১০ সাল থেকে বিস্কুট তৈরি শুরু করা হয় মেশিনে। তারপর ১৯১৮ সালে ইংরেজ ব্যবসায়ী সিএইচ হোমস অংশীদার হন এই ব্যবসার।
এরপর ধীরে ধীরে বিকশিত হতে থাকে ব্রিটানিয়া। ১৯২৪ সালে মুম্বাইতে কারখানার প্রথম সংস্করণ হয়। এরপর বাকিটা ইতিহাস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটানিয়া কোম্পানির বিক্রি আকাশ স্পর্শ করেছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাশাপাশি অন্যান্য বন্ধু দেশকে বিস্কুট সরবরাহের বরাত পায় ব্রিটানিয়া। এরপর দেশ স্বাধীন হয়ে গেলে ব্রিটানিয়া কোম্পানি নিজেদের ব্যবসা আরও প্রসারিত করে।
এই কোম্পানির তারাতলা ইউনিটে এবার বন্ধ হয়ে গেল উৎপাদন। যার জেরে মাথায় হাত কর্মচারী থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ী অনেকেরই। যদিও সংস্থার পক্ষ থেকে কর্মচারীদের এককালীন টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় এক হোটেল ব্যবসায়ীর কথায়, ‘আমাদের পেট চলত দোকান করেই। কারখানার কর্মীরাই খেতেন। এখন আর কী। যা খরিদ্দার হতেন, আর সব বন্ধ।’