বাংলাহান্ট ডেস্ক : প্রতিবেশী মহিলার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন উত্তরপ্রদেশের (UP) এক বিজেপি কর্মী (BJP Supporters)। তাঁর চরিত্র নিয়ে করেছিলেন কটূক্তি। এরই সঙ্গে তাঁকে শারীরিক ভাবেও নিগ্রহ করেন ওই বিজেপি কর্মী। এই ‘অপরাধের’ শাস্তি দিতেই ওই বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করলো উত্তরপ্রদেশ সরকার (UP Government)। তার বিরুদ্ধে ২৫০০০ টাকার জরিমানার পাশাপাশি তার বাড়িও বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলো স্থানীয় প্রশাসন।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকারের ‘বুলডোজার অ্যাকশন’ এখন গোটা দেশে পরিচিত। যোগী সরকার ২.০ তে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়েছে এই ব্যবস্থা। সোমবার সেই বুলডোজার অ্যাকশনেরই মুখোমুখি হল এক বিজেপি কর্মীর। ওই বিজেপি কর্মীর নাম শ্রীকান্ত ত্যাগী। তিনি নয়ডার গ্র্যান্ড ওমাক্সে অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে আবাসনের ভিতরে বেআইনি দখল এবং নির্মাণের অভিযোগ আনেন আবাসিকরা। অভিযোগ, গত শুক্রবার এই বিষয় নিয়ে আবাসিকদের সঙ্গে বাদ-বিতর্ক চলার সময় এক মহিলাকে হেনস্থা করেন তিনি। নারী-হেনস্থার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় এফআইআর। পরে নয়ডার পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে গ্যাংস্টার আইনেও অভিযোগ দায়ের করে। এই আইনের বলেই অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙতে পারে প্রশাসন।
ঠিক কী হয়েছিল ঘটনা? শ্রীকান্ত ত্যাগী যে আবাসনে থাকেন, সেই আবাসনের এক মহিলা অভিযোগ আনেন শ্রীকান্ত অবৈধভাবে আবাসনের জায়গা দখল করছেন। ওই আবাসনে শ্রীকান্তের লাগানো কিছু গাছের বিষয়ে আপত্তি জানান ওই মহিলা। সেই নিয়ে চলে বাদ- বিতর্ক। সেই সময়ই ওই মহিলার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করেন শ্রীকান্ত। এমনকি শ্রীকান্ত ওই মহিলাকে ধাক্কাধাক্কিও করেন বলে অভিযোগ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় ওই ঘটনার ভিডিও। অভিযোগ দায়ের করা হয় থানায়। অবস্থা বেগতিক বুঝে বেপাত্তা হয়ে যায় শ্রীকান্ত।
তবে প্রথমেই পুলিশ শ্রীকান্তর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। জানা যাচ্ছে, ওই আবাসন থানা ফেস-২ এালাকায় পড়ে। ওই থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক সুজিত উপাধ্যায় এই বিষয়ে কোনও অভিযোগই নিতে চাননি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে, সুজিতকে বরখাস্ত করে পরমহংস তিওয়ারিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারপরই বুলডোজার অ্যাকশনে নামে প্রশাসন। শ্রীকান্ত ত্যাগী এলাকায় নিজেকে বিজেপির কিষাণ মোর্চার সর্বভারতীয় কার্যকর্তা হিসাবে পরিচয় দিত। কিন্ত বাস্তব হলো বিজেপি কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদেই তিনি নেই।
মহিলাকে হেনস্থা করার পর বিজেপি কর্মীর বাড়িতে বুলডোজার চালানোর পরই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, প্রশাসন যদি এতই নিরপেক্ষ হত, তাহলে, হাথরস, উন্নাও কিংবা গোরক্ষপুরে একের পর এক ধর্ষণ এবং নারী-বিরোধী অপরাধের ঘটনায় দোষীরা ছাড় পেল কিভাবে? উন্নাওয়ের ঘটনায় খোদ বিজেপি বিধায়কেরই নাম ছিল মূল অভিযুক্তের তালিকায়। হাথরসের ঘটনায় ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশ এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধেই।