বাংলাহান্ট ডেস্ক : স্বপ্ন ছিল শিক্ষক হওয়ার কিন্তু সংসারের তাগিদে করতে হচ্ছে সাফাই কর্মীর কাজ। পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার সোনু শর্মা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। বর্তমানে পুরসভার অস্থায়ী সাফাই কর্মী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি “নেট” পরীক্ষা ও রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
গুসকরা কলেজ থেকে ৫৫% নম্বর সহ রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সাম্মানিক স্নাতক হয়েছেন সোনু। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৫৭% নম্বর নিয়ে স্নাতকোত্তর। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে কনিষ্ঠ সোনু। দুই দাদার মধ্যে একজন ভাড়ার গাড়ি চালক ও অন্যজন কাঠমিস্ত্রি। স্নাতকোত্তরের পাশাপাশি সোনু বিএড ও কম্পিউটারেও ডিগ্রী অর্জন করেছেন ।
সোনুর বাবা ছিলেন একজন কাঠের মিস্ত্রি। খুবই কষ্ট করে পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছেন ছেলেকে। কলেজে ওঠার পর সোনু নিজেই শুরু করেন টিউশন পড়ানো। সোনু জানিয়েছেন, “শিক্ষক নিয়োগ বহুদিন বন্ধ রাজ্যে। পাবলিক সার্ভিস কমিশন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি পরীক্ষা দিয়েও চাকরি পাইনি। বয়স্ক বাবার উপর সংসারের চাপ বাড়ছিল। তাই গত সপ্তাহ থেকে পুরসভার অস্থায়ী সাফাই কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেছি।”
সোনু বলেছেন, তিনি পাঁচ দিন দৈনিক ১৭৫ টাকা মূল্যে কাজ করেছেন। সোনুর এই কাজে একদম খুশি নন বাবা জয়প্রকাশ। তিনি বলেন, “ছেলেকে এভাবে ঘুরে ঘুরে রাস্তাঘাটে ময়লা সাফ করতে হয়। এটা একদমই ভালো লাগেনা। আমি ওকে বলব শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ও যেন না ছাড়ে।” সোনু অবশ্য জানিয়েছেন, “কোনও কাজই ছোট হয় না। আমার অনেক বন্ধু চাকরি না পেয়ে সবজি বিক্রি করছেন। আমি আশা করি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সক্রিয় হলে এই সমস্যা কেটে যাবে।”