বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আগেই দিয়েছিল স্থগিতাদেশ, এবার ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের (Primary Teachers) চাকরি বাতিলের রায়ের উপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করল আদালত। হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ (CHC Division Bench) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Gangopadhyay) রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। সোমবার তারই মেয়াদ বৃদ্ধি হল। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৩ অক্টোবর।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় প্রথমে একজোটে ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গাঙ্গুলি। পরে সংখ্যা পরিবর্তন করে হয় ৩২ হাজার। পর্ষদকে বিচারপতির নির্দেশ ছিল, আগামী চার মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। বিচারপতি এও বলেছিলেন, চাকরিচ্যুতরা আগামী ৪ মাস স্কুলে যেতে পারলেও তাদের পার্শ্বশিক্ষকের বেতন দেওয়া হবে। তবে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাকরিচ্যুতরা অংশ নিতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান চাকরিহারাদের একাংশ। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষককে পার্শ্বশিক্ষক হিসাবে কাজ করতে হবে না। তারা যেমন ছিলেন তাই থাকবেন। তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নতুন নিয়োগ পক্রিয়া নিয়ে দেওয়া নির্দেশ বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: ফের নয়া ছুটি ঘোষণা! বন্ধ থাকবে গোটা রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস, মুখে হাসি বঙ্গবাসীর
ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, পর্ষদকে নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সেই নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে এই ৩২ হাজার শিক্ষককেও। তারা সেখানে উত্তীর্ণ না হলে চাকরি খোয়াবেন। চাকরি থাকার পরেও কেন নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে এই মর্মে সুপ্রিম কোর্টে যায় চাকরিহারা দের একাংশ ও পর্ষদ কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণাবর্তের হুঙ্কার! দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় টানা বজ্রবিদ্যুৎ সহ তুমুল বৃষ্টি, ফের ভাসবে কলকাতা?
এরপর গত ৭ জুলাই এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, চাকরি বাতিল নিয়ে মামলার যৌক্তিকতা নিয়ে তারা কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। তবে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে ওই ৩২০০০ শিক্ষক চাকরি করছেন। তাই তাদের একাংশের বক্তব্য শোনা উচিত ছিল হাইকোর্টের।ীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, ক্ষতিগ্রস্তদের মামলায় সুযোগ না দিলে স্বাভাবিক ন্যায়বিচারের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে। তাছাড়া এত দিন পরে এই বিশাল সংখ্যক প্রার্থীর নতুন করে ইন্টারভিউ নেওয়া খুবই জটিল খরচসাপেক্ষ বলেও মন্তব্য করে আদালত। এরপরেই হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের অন্তর্বর্তী নির্দেশ খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চের চাকরি বাতিলের রায় নিয়ে সরাসরি কোনও নির্দেশ দেয়নি আদালত। তবে যত দ্রুত সম্ভব হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চকে এই মামলায় ওই ৩২০০০ শিক্ষকের দিকটাও দেখে রায় দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এ বার ডিভিশন বেঞ্চে সেই একক বেঞ্চের রায়ে দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল রাখল।