বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর প্রক্রিয়ায় ওবিসি শংসাপত্র ব্যবহার করা যাবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে আইনি জটিলতা। ২০১০ সালের পর দেওয়া ওবিসি শংসাপত্র আগেই বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। তবুও এসআইআরের নথি হিসেবে সেই শংসাপত্র ব্যবহারের অভিযোগ ওঠায় এবার বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিল আদালত।
ওবিসি শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ আগেই দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)
২০১০ সালের মার্চ মাসের পর ইস্যু হওয়া ওবিসি শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ আগেই দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, ওই সব শংসাপত্র ভবিষ্যতে কোথাও ব্যবহার করা যাবে না বলেও জানিয়েছিল আদালত। তবে পড়াশোনা ও চাকরির সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR)-এর নথি হিসেবেও ওবিসি শংসাপত্র ব্যবহার করা হচ্ছে, এই অভিযোগ উঠেই মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে।
সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব জাতীয় নির্বাচন কমিশনের, জানাল হাই কোর্ট
মামলাকারীর তরফে আদালতে আবেদন জানানো হয়, এসআইআরের গ্রহণযোগ্য নথির তালিকা থেকে ওবিসি শংসাপত্র বাদ দেওয়া হোক। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি কৃষ্ণা রাও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এসআইআরের নথি হিসেবে ওবিসি শংসাপত্র গ্রহণযোগ্য হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব জাতীয় নির্বাচন কমিশনেরই। হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ৭ দিনের মধ্যে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে পল ২০১০ সালের মার্চ মাসের পর ইস্যু হওয়া ওবিসি শংসাপত্র এসআইআরের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য কি না।
আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী অরিজিৎ বক্সির বক্তব্য, এসআইআরের জন্য যে নথিগুলি গ্রহণযোগ্য, তার মধ্যে জাতিগত শংসাপত্রও রয়েছে। এই বিষয়টি উল্লেখ করেই তিনি জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেন এবং নথির তালিকা সংশোধনের দাবি জানান। যদিও এখনও পর্যন্ত কমিশনের তরফে এই বিষয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
আইনজীবীর আরও দাবি, গত বছরের ২২ মে কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court) ২০১০ সালের পর তৈরি সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করে দেয়। আদালতের নির্দেশ ছিল, ওই সার্টিফিকেট ভবিষ্যতে আর কোনও কাজে ব্যবহার করা যাবে না। সেই কারণে এসআইআরের নথি হিসেবেও যাতে ওই শংসাপত্র ব্যবহার না হয়, তা নিশ্চিত করার আবেদন জানানো হয়।
এদিকে রাজ্যে এসআইআর-এর খসড়া ভোটার তালিকা ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে শুনানি এবং নথি যাচাইয়ের প্রক্রিয়া। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, শুনানিপর্বে মোট ১৩টি নথিকে প্রামাণ্য হিসেবে ধরা হবে। সেই তালিকায় রয়েছে তফসিলি জাতি, তফসিলি জনজাতি এবং ওবিসি শংসাপত্রও।

এই পরিস্থিতিতে বাতিল হওয়া ওবিসি শংসাপত্রের ব্যবহার বন্ধের দাবিতে হাই কোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয় বিজেপি শিবির। তবে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, SIR সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় একসঙ্গে বিবেচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখন নজর কমিশনের দিকেই। আগামী সাত দিনের মধ্যে তারা কী সিদ্ধান্ত নেয়, তার উপরই নির্ভর করছে এসআইআর প্রক্রিয়ায় ওবিসি শংসাপত্রের ভবিষ্যৎ।












