বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুলিশের (Police) ভূমিকা। বহুবার উষ্মা প্রকাশ করেছেন বিচারপতি। এবার যেমন একটি মামলায় কড়া নির্দেশ দিয়ে দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ (Justice Tirthankar Ghosh)। গল্ফগ্রিনে যুবকের ওপর হামলার ঘটনার তদন্তে নজরদারির জন্য ডেপুটি কমিশনারকে (ডিসি) নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি এক মাসের মধ্যে সকল নথি খতিয়ে দেখে নিয়ে তাঁকে চার্জশিট জমা করতে বলেছে আদালত।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন হাইকোর্টের (Calcutta High Court)!
গত বছর ডিসেম্বর মাসে কলকাতার গল্ফগ্রিন অঞ্চলে নিজের বাড়ির সামনে এক যুবক স্থানীয়দের হামলার মুখে পড়েন বলে অভিযোগ। আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে আরেকটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে পক্ষাঘাতগ্রস্ত ওই যুবক। তাঁর পক্ষে আর স্বাভাবিক কাজ করা সম্ভব নয়।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) এই মামলার শুনানি ছিল। সেদিনই এই ঘটনার তদন্তে নজরদারির জন্য ডিসি-কে নির্দেশ দেন বিচারপতি ঘোষ। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকার ডিসি তদন্তে নজর রাখবেন। একইসঙ্গে তাঁর নির্দেশ, এক মাসের মধ্যে তাঁকে সকল নথি খতিয়ে দেখে চার্জশিট জমা করতে হবে। প্রয়োজন মনে করলে তিনি নতুন তদন্তকারী অফিসার নিয়োগ করতে পারেন। এছাড়া নিম্ন আদালতে এই মামলার শুনানিতে নজর দিতে একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ পার্থর ‘চেম্বারে’ চলতো বৈঠক! কারা থাকতেন? সব জেনে গেল CBI! ঘুরে যাবে নিয়োগ দুর্নীতির মোড়?
জানা যাচ্ছে, গল্ফগ্রিনে আক্রান্ত (Golf Green Incident) ওই যুবকের পরিবারের অভিযোগ, নিম্ন আদালতে ওই যুবকের পরিস্থিতির বিষয়ে পুলিশ জানায়নি। প্রথম হাসপাতালের মেডিক্যাল সার্টিফিকেট ওখানে জমা করা হয়েছিল। পুলিশের গাফিলতির জন্য অভিযুক্তরা সহজেই জামিন পেয়ে যান বলে অভিযোগ তাঁদের। এই নিয়ে গত শুনানিতেও বিচারপতি ঘোষের প্রশ্নের মুখে পড়েছিল পুলিশ।
হাইকোর্ট জানতে চায়, পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটা করেছে কিনা। কেন দ্বিতীয় হাসপাতালের মেডিক্যাল রিপোর্ট নিম্ন আদালতে জমা দেওয়া হয়নি? জিজ্ঞেস করেন বিচারপতি। একইসঙ্গে বলা হয়, কোন অফিসার মেডিক্যাল নথি জমা করেছিল সেটা পুলিশকে জানাতে হবে। গতকালের শুনানিতে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, ওই ঘটনায় ৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তদন্তকারী অফিসার মেডিক্যাল বিষয়ক নথি আদালতে জমা করেছিলেন।
একথা শোনার পর হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি বলেন, ‘তদন্তের এই অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে না কলকাতা পুলিশের তদন্ত! থানা কি তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়? কারণ, বলতে বাধ্য হচ্ছি, বিষয়টি নিয়ে বাজেভাবে পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। ভুল করে এড়িয়ে যাওয়ার বিষয় নয় এটা। মনে হচ্ছে, পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে গাফিলতি করেছে। কারণ, পুলিশের কাছে এত নথি থাকার পরেও মাথা কাজ করেনি, এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়’! আগামী মার্চ মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।