বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ভ্রাতৃবধূকে নিয়ে এক মামলায় বিচারপতিকে মামলা থেকে সরার জন্য ‘চাপ’ দেওয়ার মত ঘটনা ঘিরে তোলপাড়। মুখ্যমন্ত্রীর ভ্রাতৃবধূ তথা রানি বিড়লা গার্লস কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের শো-কজ নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়েছিলেন সেই কলেজের অধ্যক্ষ শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য। সেই মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেওয়াকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ও রাজ্যের এজি কিশোর দত্তের মধ্যে নজিরবিহীন বাদানুবাদ দেখা গেল।
হাইকোর্টে বেনজির ‘সংঘাত’ | Calcutta High Court
মঙ্গলবার এজির সঙ্গে বিচারপতি বসুর ‘জেদাজেদির’ পর শেষপর্যন্ত ওই মামলা থেকে অব্যাহতি নেন বিচারপতি বসু। তবে রায়ে বিচারপতি বসু বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেন, “একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি। যা আদালতের মর্যাদাকে গভীরভাবে আঘাত করেছে।” রাজ্যের বিরুদ্ধে জেদ করার অভিযোগ তুলে মামলা ছাড়ার কথা জানান জাস্টিস বসু।
আদালত সূত্রের খবর, শুনানির সময় মামলাকারীর পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী নির্দেশের আর্জি জানানো হয়। শুনানি শেষে অন্তর্বর্তী রায় ঘোষণা শুরু করেছিলেন জাস্টিস বসু। তবে সে সময়ই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল তাতে তীব্র আপত্তি জানিয়ে বলেন, তাঁর সওয়াল এখনও শেষ হয়নি।
সেই প্রেক্ষিতে আদালত বক্তব্য জানানোর জন্য এজিকে সুযোগ দেয়। বিচারপতি বসু প্রস্তাবে বলেন, রায়ের প্রতিলিপিতে এখনও স্বাক্ষর হয়নি। তাই এজি চাইলে সওয়াল করতে পারেন বলেও জানান বিচারপতি। কিন্তু এরপরও ওই মামলা থেকে বিচারপতিকে সরে যাওয়ার জন্য রীতিমতো জেদ করতে থাকেন এজি। শেষমেশ বিরক্ত হয়ে মামলাটি থেকে বিচারপতি বসু যেন অব্যাহতি নেন।
মামলা থেকে অব্যাহতি নিয়ে জাস্টিস বসুর মন্তব্য, “রাজ্যের এই অবস্থান দুঃখজনক। অন্তর্বর্তী নির্দেশ নিয়ে গত ৬ অগস্ট শুনানি শুরু হয়। মামলাকারীর আইনজীবী সওয়াল শুরু করেছিলেন। তবে রাজ্য শুনানি মুলতুবির আবেদন করে। ফের ৭ অগস্ট শুনানির দিন ধার্য হলে সেদিনও মামলা পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়। ১১ অগস্ট ফের শুনানির দিন ধার্য করা হলে রাজ্য-সহ সব পক্ষের বক্তব্য শুনে অন্তর্বতী নির্দেশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।”
আরও পড়ুন: সাগরে নিম্নচাপ, আজ থেকে ভারী বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গে! কবে কমবে দুর্যোগ? আবহাওয়ার খবর
তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করে বিচারপতি বলেন, “যখন কোনও পক্ষ এই আদালতের প্রতি আস্থা রাখতে ব্যর্থ হয়, তখন মামলাটি ছেড়ে দেওয়া ভালো কারণ, বিচার শুধু হতে হবে তা নয়, বিচার হচ্ছে তা দেখাতেও হবে।”হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে এই বিষয়ে জানানো হবে বলেও স্পষ্ট করে বলেন জাস্টিস বসু।