বাংলা হান্ট ডেস্কঃ চূড়ান্ত মেধাতালিকায় প্রথম, তবুও চাকরি পাননি মানসী পাল। এসএসসি-র যুক্তি ছিল, তাঁর বয়সসীমা পেরিয়েছে। সেই যুক্তি খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এক সপ্তাহ ধরে শুনানির পর বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন রিজেকশন মেমো অবৈধ, দুই সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগপত্র দিতে হবে।
চাকরি হাতছাড়া শুধু বয়সের অজুহাতে
বোলপুরের বাসিন্দা মানসী পাল ২০১৫ সালের টেট (TET) উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ২০১৬-র আপার প্রাইমারির (Upper Primary) নিয়োগে প্রথম কাউন্সেলিং (Counselling)-এ ডাক পেলেও, বয়স পেরিয়েছে এই যুক্তিতে তাঁকে ফিরিয়ে দেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission)। এমনকী, একটি মেমো দিয়ে জানানো হয়, নিয়োগ দেওয়া যাবে না। অথচ বিচারপতি শেখর ববি সরাফের এজলাসে ২০১৯ সালে দায়ের হওয়া মামলায় আগেই নির্দেশ ছিল, ২০১৩ সালের টেট প্রার্থীরা ২০১৫-র পরীক্ষায় বসতে পারবেন—বয়স পেরোলেও।
মেধাতালিকায় শীর্ষে নাম, তবুও নয় চাকরি!
এসএসসি-র (SSC) তথ্য যাচাইয়ের পর মানসী চূড়ান্ত মেধাতালিকায় (Merit List) প্রথম স্থানে ছিলেন। বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ (Division Bench)-ও এই তালিকাকে বৈধ বলে মান্যতা দেয়। তবু এসএসসি তাঁকে নিয়োগ দেয়নি। আদালতে মানসীর পক্ষের আইনজীবী জানান, দ্বিতীয় বারও তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, অতিরিক্ত বয়সের কারণ দেখিয়ে।
বিচারপতির হস্তক্ষেপে এসএসসি-র মেমো ‘অবৈধ’ ঘোষণা
৭ মাস ধরে চলা শুনানির শেষে বুধবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু (Justice Biswajit Basu) রায় দেন—এসএসসি-র রিজেকশন মেমো সম্পূর্ণ অবৈধ। তাঁর পর্যবেক্ষণ, নিয়ম মেনে আবেদনকারী এক জনকে শুধু বয়সের যুক্তিতে বঞ্চিত করা যায় না। দুই সপ্তাহের মধ্যে মানসী পালকে নিয়োগপত্র (Appointment Letter) দিতে নির্দেশ দেন তিনি।
এই মামলার পাশাপাশি বুধবার হাইকোর্টে (Calcutta High Court) আর এক বিতর্কে উত্তাল হল আদালত। অভিযোগ, ২০২৫-এর নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি (SSC 2025 Notification)-তে স্নাতকস্তরে ৫০% নম্বর না থাকলে আবেদন করা যাবে না। অথচ ২০১৬ সালের নিয়োগে ৪৫%-৪৯% নম্বর পেলেও আবেদন করা যেত। এই নয়া নিয়মে বহু যোগ্য চাকরিপ্রার্থী (Eligible Candidates) পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাচ্ছেন না। এই নিয়ে বৃহস্পতিবার ফের শুনানি হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় DA নিয়ে উত্তাল পরিস্থিতি! এরই মধ্যে মহার্ঘ ভাতা বাড়তে চলেছে এই সরকারি কর্মীদের
ভিডিও ছড়ালেই নয়া বিতর্ক, এসএসসি-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন হাজার
এ দিনের রায়ের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পরই রাজ্যের শিক্ষা মহলে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। এসএসসি-র বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা, নথিপত্র ঘেঁটে ভুল বেরোচ্ছে, আর একের পর এক চাকরি প্রার্থী (Job Seekers)-র হয়রানির ছবি উঠে আসছে আদালতে (Calcutta High Court)।