বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রেশন দুর্নীতি মামলায় (West Bengal Ration Distribution Case) নয়া মোড়। রেশন কেলেঙ্কারি মামলায় এবার পুলিশি তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। সোমবার হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে এই সংক্রান্ত শুনানি ছিল। শুনানিতে বিচারপতির নির্দেশ, রেশন দুর্নীতি মামলায় যদি এখনও পুলিশি তদন্ত জারি থাকে তা হলে আপাতত তা স্থগিত থাকবে। আগামী ৫ মার্চ পর্যন্ত রেশন দুর্নীতির সমস্ত মামলার উপর পুলিশি তদন্তে স্থগিতাদেশের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
রেশন মামলার শুনানিতে এদিন বিচারপতি সেনগুপ্তের আরও নির্দেশ, এই সংক্রান্ত নিম্ন আদালতের বিচারপ্রক্রিয়াও চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না। পাশাপাশি এই মামলায় পুলিশকে কেস ডায়েরি পেশ করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ২০১৯ সালে বালিগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া এফআইআর-এর ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের বিচারপ্রক্রিয়ার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্ট।
পর্যবেক্ষণে বিচারপতি সেনগুপ্তের বেঞ্চ জানিয়েছে, যদি এই মামলায় পুলিশের তদন্ত এখনও চলে, তাহলে তার উপর স্থগিতাদেশ থাকবে। প্রসঙ্গত সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের থেকে রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত সমস্ত মামলার ভার সিবিআই (CBI), এর হাতে তুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি (ED)। আদালতে ইডির অভিযোগ ছিল, নদিয়া ও কলকাতা মিলিয়ে রেশন দুর্নীতি মামলায় রাজ্য পুলিশের কাছে মোট ৬টি মামলা রয়েছে। রাজ্য পুলিশ যে সমস্ত মামলার তদন্ত করছে তাতে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। শুধু তাই নয়, যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও আটক বা গ্রেফতারও করা হয়নি।
ইডির আর্জি ছিল, রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত যে সব মামলা রাজ্য পুলিশের হাতে রয়েছে তা সরিয়ে নিয়ে সিবিআই কে দেওয়া হোক। আদালতে ইডি জানিয়েছিল, রাজ্য পুলিশের হাতে থাকা মামলাগুলিতে কী অগ্রগতি হয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে এসব তথ্য চেয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু তার কোনও উত্তর মেলেনি। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় সংস্থা।
আরও পড়ুন: ‘নিশ্চিত ভাবে DA সরকারি কর্মচারীদের অধিকার’, মন্তব্য রাজ্যের ‘এই’ মন্ত্রীর, চরম অস্বস্তিতে মমতা
প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতি মামলায় গত বছরই ইডির হাতে গ্রেফতার হন ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। পরে তার সূত্র ধরে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্ৰিয় মল্লিককে গ্রেফতার করে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতেই গ্রেফতার হয়েছেন বনগাঁর প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। ইডির স্ক্যানারে আছে সন্দেশখালির নিখোঁজ তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। তার খোঁজ চলছে। অথচ রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত ছ’টি এফআইআর ২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া সত্ত্বেও তারা কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ তুলেছিল ইডি। পুলিশের হাতে থাকা সেই মামলাগুলিতেই এ বার পুলিশি তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ দিল হাই কোর্ট।