বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রশ্নের মুখে পড়ল রাজ্য। অবিলম্বে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু (Justice Biswajit Basu)। সেই সঙ্গেই ওই সব অঞ্চলে কোনও রকম নির্মাণ থাকলে তা সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বক্সা ব্যাঘ্রপ্রকল্প সম্বন্ধিত একটি মামলায় হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য সরকার (Government of West Bengal)।
কী কী নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
বক্সার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর কোনও অতিথি নিবাস রাখা যাবে না। পরিবেশ আদালত তথা গ্রিন ট্রাইবুন্যালের তরফ থেকে আগেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এরপর সেই জল গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট অবধি। পরিবেশ আদালতের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন জয়ন্তী সহ বক্সা ব্যাঘ্রপ্রকল্পের ‘বাফার’ অঞ্চলের নানান রিসর্ট ও হোটেলের মালিকরা। ওই মামলাতেই এদিন উচ্চ আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ল রাজ্য।
জাস্টিস বসু জিজ্ঞেস করেন, ‘বাঘ সংরক্ষণের জন্য নির্ধারিত বনাঞ্চলে কীভাবে পর্যটন ভিলেজ বানানো হয়েছে? সেখানে পাথর ভাঙা হচ্ছে। পাথর মাফিয়ারা ব্যবসায়িক কাজ করছেন। পাথর কেটে ইট বানানো হচ্ছে। রাজ্যে কি ওই বিষয়ে ভেবে দেখার দরকার নেই?’
এরপরেই রাজ্যের আইনজীবীকে কার্যত ভর্ৎসনার সুরে বিচারপতি বসু (Calcutta High Court) বলেন, ‘ওই এলাকা কেন ফেলে রেখেছেন? নির্মাণ করে ব্যবসা শুরু করুন’! এরপরেই অবিলম্বে নির্মাণ কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন তিনি। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলে কোনও নির্মাণ থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ‘বাংলার ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য তৃণমূল বিপজ্জনক’! ফিরহাদকে একহাত নিয়ে বিস্ফোরক অমিত মালব্য
রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশে হাইকোর্টের নির্দেশ, ‘ওই সব অঞ্চলে কাজ করা বন্ধ করুন। কোনও নির্মাণ থাকলে সেটা সরিয়ে দিন। সংরক্ষিত বনাঞ্চল এলাকার পরিবেশ রাজ্যকে রক্ষা করতে হবে’। এদিকে এদিনের শুনানিতে রাজ্যের তরফ থেকে জানানো হয়, ওই বনাঞ্চলের একাংশ পর্যটন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে হলেও সংরক্ষিত (Buxa Tiger Reserve) অঞ্চল বাণিজ্যিক কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়নি।
রাজ্যের তরফ থেকে আদালতে আরও জানানো হয়, ২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, কোনও বনাঞ্চলে পদ্ধতি মেনে ‘রেভিনিউ ভিলেজ’ নির্মাণ করা যাবে। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে দেশের সকল ব্যাঘ্রপ্রকল্পের ‘কোর’ এলাকায় পর্যটন নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গেই পর্যটকদের জন্য নির্ধারিত অঞ্চলে রিসর্ট, হোটেল নির্মাণের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়।
এদিন বক্সা ব্র্যাঘ্রপ্রকল্প সম্বন্ধিত এই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টে (Calcutta High Court) উপস্থিত ছিলেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। তাঁর উদ্দেশে জাস্টিস বসু বলেন, ‘আপনি এক সময় এই সব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আর এখন ওই বনাঞ্চল বাঁচানোর কোনও সদিচ্ছা দেখতে পাচ্ছি না। আপনার ভাবমূর্তির সঙ্গে এটা মেলে না’।