বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লোকসভা ভোটের মধ্যেও সন্দেশখালি (Sandeshkhali) নিয়ে চর্চা থামার নাম নিচ্ছে না। ‘শাহজাহান গড়’ থেকে কখনও উদ্ধার হচ্ছে বিপুল অস্ত্র ভাণ্ডার, কখনও আবার সাড়া ফেলে দিচ্ছে একটি ‘স্টিং অপারেশনে’র ভিডিও। এবার আবার সিবিআইয়ের (Central Bureau of Investigation) তরফ থেকে নেওয়া হল একটি বিরাট পদক্ষেপ। তা নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা।
আসলে ভোটের প্রস্তুতি-পর্ব থেকেই এলাকার দাগি দুষ্কৃতী এবং অস্ত্র উদ্ধারের কাজ শুরু হয়ে যায়। ভোট ঘোষণা এবং আদর্শ আচরণবিধি লাগু হওয়ার পর তা সম্পন্ন করার দায়িত্ব গিয়ে পড়ে প্রশাসনের কাঁধে। তবে সিবিআইয়ের (CBI) অভিযোগ, রাজ্যের অন্যান্য জায়গায় প্রশাসনের তরফ থেকে এই উদ্যোগ নিতে দেখা গেলেও, বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের অধীন সন্দেশখালি ১ এবং ২ নম্বর ব্লকের সন্দেশখালি থানা, ন্যাজাট থানা ও রাজবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির অধীন এলাকায় তেমনটা চোখে পড়ছে না।
কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, শেখ শাহজাহানকে (Sheikh Shahjahan) নিয়ে তদন্ত চলাকালীন এলাকায় স্থানীয় দাগি দুষ্কৃতী, শাহজাহানের সিন্ডিকেট বাহিনী এবং তাঁদের কাছে থাকা অবৈধ অস্ত্রের একটি সম্ভাব্য তালিকা তাঁদের হাতে এসেছে। অন্যদিকে ভোটের কারণে ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের বাকি সকল জায়গার মতো সন্দেশখলিতেও অস্ত্রের তালিকা জমা করেছে রাজ্য পুলিশ। এবার সেই দু’টি তালিকা মিলিয়ে দেখতে চাইছেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা।
আরও পড়ুনঃ রাজ্যে বন্ধ হবে CBI তদন্ত? মমতা সরকারের করা মামলার শুনানি শেষ, কী রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট?
কেন্দ্রীয় এজেন্সির এক কর্তা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের অনুমান, কমিশনের কাছে প্রশাসনের তরফ থেকে যে তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে, তার বাইরেও আরও বহু অভিযুক্ত রয়েছেন। তাঁরা এলাকায় বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন’। শেখ শাহজাহান বর্তমানে জেলবন্দি হলেও, লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের দিন সন্দেশখালির সরবেড়িয়া মল্লিকপুর পঞ্চায়েতে এক শাহজাহান ঘনিষ্ঠের আত্মীয়র বাড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। শাহজাহান এবং তাঁর ভাইয়ের নামের অস্ত্রের লাইসেন্সও মিলেছিল। আদর্শ আচরণবিধি লাগু হয়ে হাওয়ার পরেই ওই অস্ত্র কীভাবে মজুত ছিল, সেই প্রশ্ন উঠেছিল তখন।
গোয়েন্দাদের দাবি, সন্দেশখালি ১ এবং ২ নম্বর ব্লকের শাহজাহানের প্রচুর অস্ত্র ভাণ্ডার লুকোনো আছে। তাঁর সিন্ডিকেট বাহিনীর কাছে সেই অস্ত্র মজুত আছে বলে ধারণা তদন্তকারীদের। স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে সেই অস্ত্র উদ্ধারে কোনও উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের। আর ঠিক এই কারণে রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে কমিশনে জমা দেওয়া অস্ত্র তালিকা পাওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য পুলিশের দ্বারস্থ হতে চলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। তাঁদের কথায়, হাই কোর্টের তরফ থেকেই বলা হয়েছে, তদন্তকার্যে রাজ্য পুলিশকে সহায়তা করতে হবে। এই প্রসঙ্গে রাজ্য পুলিশের একজন শীর্ষ কর্তা বলেন, সিবিআই তদন্তে তাঁদের তরফ থেকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে গোয়েন্দাদের দাবি, শাহজাহান এবং তাঁর ভাই আলমগীর বর্তমানে জেলবন্দি হলেও সন্দেশখালি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তাঁর সিন্ডিকেট বাহিনীর কিছু সদস্যরা। এখনও অনেকে সশত্র অবস্থায় এলাকায় ঘুরছেন। তাঁদের অনেকের নাম আবার পুলিশের খাতায় আসামী হিসেবে আছে। তা সত্ত্বেও কেন প্রিভেনটিভ অ্যারেস্টের আওতায় পড়বেন না তাঁরা? উঠছে সেই প্রশ্ন।