বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কেন নীল-সাদা করা হয়েছে বাংলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রং? এবার বিতর্কের আবহে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ‘জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন’ প্রকল্পের টাকায় তৈরি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রং গেরুয়া করা হচ্ছে না বলেই রাজ্যের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। এই অভিযোগ তুলে বারংবার সরব হয়েছেন মমতা। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের (এনএইচএম) অধীনে তহবিলের বকেয়া অর্থের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে সম্প্রতি মোদীকে (PM Narendra Modi) একটি চিঠি লিখেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল সেই চিঠির পাল্টা চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র।
চিঠি দিয়ে কেন্দ্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য মিশনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের শর্ত মানেনি বাংলা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক তরফে অভিযোগ, আয়ুষ্মান ভারতের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলির নাম পাল্টে দিয়েছে রাজ্য। পাশাপাশি অভিযোগ এসেছে স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলির রং নিয়েও। শর্তাবলী অনুযায়ী, সেই স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলির রং রাখতে হত মেটালিক হলুদ। তবে রং বদল করে বিল্ডিংয়ের রং নীল-সাদা করা হয়েছে।
সোমবার এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মমতা বলেন, কেন্দ্রের পছন্দ মতো রং করা হয়নি বলে ‘প্রাপ্য’ টাকা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক কারণেই বঞ্চনার শিকার বাংলা। ওদিকে বিজেপি সহ একাধিক বিরোধী শিবিরের বহুদিনের অভিযোগ, রাজ্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্কুল, কলেজ ইত্যাদির রং নীল-সাদা করা হয়েছে সেটাও মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই। ওটা মমতার পছন্দের রং। ওটাও রাজনৈতিক রং।
গতকাল পাল্টা মমতা বলেন, ‘নীল-সাদা কোনও রাজনৈতিক রং নয়। ওটা আকাশের রং। আকাশের কোনও লিমিট নেই। তাই ওই রং।’’ বিরোধীদের উদ্দেশে মমতার কড়া বার্তা, ‘‘ভোটের সময় রং নিয়ে রাজনীতি চললেও সব সময় চলতে পারে না। ওসবের রং আমি গেরুয়া করতে দেব না।’’
সম্প্রতি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্র জানিয়েছে, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ক্ষেত্রে বাংলা বঞ্চনার শিকার এই অভিযোগ সত্য নয়। বরং রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য মিশনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের শর্ত ভঙ্গ করেছে বাংলা। তাই এর টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে। যেই সমস্ত রাজ্য কেন্দ্রের শর্তাবলী মেনে কাজ করেছে তাদের টাকা ঠিক মতই দেওয়া হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করেছে যে, ব্র্যান্ডিং নির্দেশিকা মেনে চলার বিষয়ে আলোচনা করতে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সঙ্গে বহু সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। “এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গেও বেশ কিছু নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে ” বলেও জানিয়েছে কেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, ‘জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন’ প্রকল্পের ৬০% টাকাই দেয় কেন্দ্র। বাকি ৪০% দেয় রাজ্য। তবে শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ তুলে কেন্দ্রে নিজের অংশ ৮২৬.৭২ কোটি টাকা রাজ্যকে দিচ্ছেনা বলে দাবি নবান্নের।