বাংলা হান্ট ডেস্ক: চিনের (China) সঙ্গে ভৌগোলিক এবং সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহে এবার একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিল ভারত (India)। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, প্রথমবার ভারতের তরফে আফ্রিকার একাধিক দেশে প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে বা দূত নিয়োগ করা হচ্ছে। মূলত, আফ্রিকার দেশগুলির সাথে কৌশলগত এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যেই এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
জানিয়ে রাখি যে, চিনের ঋণে জর্জরিত হয়ে গলা পর্যন্ত ডুবে রয়েছে দ্বীপরাষ্ট্র জিবৌতি। ইতিমধ্যেই সেখানে বেজিংয়ের তরফে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। তবে, এবার চিনের সেই চালের পাল্টা জবাব দিতেই ভারতীয় সেনা একাধিক দেশে সামরিক দূত নিয়োগের পথে হাঁটছে। এমতাবস্থায়, সামরিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন যে, কৌশলগত অবস্থানের দিক থেকে জিবৌতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রয়েছে।
এদিকে, ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে এডেন উপসাগর থেকে লোহিত সাগর হয়ে সুয়েজ খালমুখী জলপথের বাব-এল-মান্দেব প্রণালীতে অবস্থিত এই দেশটিতে রয়েছে চিনের নৌঘাঁটি। এমতাবস্থায়, সেখান থেকে আরব সাগরের মাধ্যমে ভারতীয় নৌসেনাকে তারা টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ফলে, যেকোনো জরুরী কিংবা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে গুজরাট উপকূল থেকে শুরু করে ভারতের সমগ্র পশ্চিমের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা চিনা যুদ্ধ জাহাজের আওতায় চলে আসতে পারে।
আরও পড়ুন: আর যেতে হবেনা ATM! এবার এইভাবে ঘরে বসেই পেয়ে যান নগদ টাকা
এদিকে, আরও জানা গিয়েছে যে, জিবৌতিতে থাকা চিনের নৌঘাঁটিতে দ্রুত যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী ও সাবমেরিন মোতায়েন করতে চলেছে বেজিং। সামগ্রিকভাবে এমন পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন সেনাবাহিনী মনে করছে যে ভারত মহাসাগরে চিনের এই অতি-তৎপরতা নয়াদিল্লির চিন্তা বাড়িয়েছে। পাশাপাশি, PTI সূত্রে জানা গিয়েছে যে, আফ্রিকার দেশগুলি ছাড়াও আগামী দিনে দিল্লির তরফে ফিলিপিন্স সহ আর্মেনিয়া এবং পোল্যান্ডেও প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে নিয়োগ করা হবে। এমনকি, মস্কো ও লন্ডনের দূতবাসে একজন করে সেনা আধিকারিক নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। এমতাবস্থায়, সবকিছু পরিকল্পনামাফিক এগোলে স্থলবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর ১৬ জন অ্যাটাশে খুব দ্রুত নিজেদের দায়িত্ব বুঝে নেবেন বলেও জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে আসছেন ইলন মাস্ক! মোদীর সাথে হবে সাক্ষাৎ, করতে পারেন বড় ঘোষণা
প্রথম দফায় এই দেশগুলিতে হবে নিয়োগ: এদিকে, জানা গিয়েছে যে প্রথম দফায় জিবৌতি ছাড়াও ইথিওপিয়া, আইভোরি কোস্ট ও মোজাম্বিকে সেনার দূত নিয়োগ করা হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, আফ্রিকার একাধিক দেশে এই প্রথমবার অ্যাটাশে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হলেও চিনের সঙ্গে কৌশলগত আগ্রাসনের কারণে আগে থেকেই ভারতের পক্ষ থেকে জিবৌতিতে সামরিক দূত নিয়োগ করা হয়েছিল। এদিকে, এই অ্যাটাশে নিয়োগের ফলে লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে চিনা ফৌজের গতিবিধির ওপর নজর রাখার বিষয়টি আরও সহজ হবে। আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বর্তমান সময়ে আফ্রিকার একাধিক দেশ ভারতীয় সেনার বন্ধুত্ব চাইছে। পাশাপাশি অস্ত্র থেকে শুরু করে অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম পেতেও তারা গভীর আগ্রহী।