এবার কী বাংলা থেকে চিরতরে মুছে যেতে চলেছে রাজভবন? মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে তুঙ্গে জল্পনা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্য ও রাজ্যপালের মধ্যে সংঘাত আকসার বর্তমান। পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের (CV Ananda Bose) সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্কের শুরুটা মধুর হলেও ক্রমেই তা তিক্ত হয়ে উঠছে। যেকোনো বিষয়ে ঠোকাঠুকি লেগেই রয়েছে। ধনকড়ের পর সম্প্রতি রাজ্যপাল (Governor) বোসের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর বার রাজভবনের (Raj Bhavan) প্রাসঙ্গিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

শনিবার কালীঘাটে রাজভবনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজভবন রাখার কী দরকার আছে? আমি শুধু আমার রাজ্যের কথা বলছি না। রাজভবনের জন্য তো অহেতুক রাজ্যের টাকা খরচ হয়।’ এখানেই শেষ নয়, রাজ্যপালের ‘শাসন’ পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যপালেরা কী ভাবে শাসন করছেন? রাজভবনের কী প্রয়োজন রয়েছে? আমি আমার রাজ্যপালের কথা বলছি না।’’ তবে শুধুমাত্র খরচের জন্য যে এ কথা তিনি বলছেন, তা-ও জানান তাও স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মাননীয়ার যুক্তি, ‘‘সর্বত্র প্রচুর অর্থব্যয় হচ্ছে। বিল বাবদ।’’

প্রসঙ্গত, এই রাজ্যপাল ও রাজ্যের সম্পর্কের শুরুটা হয়েছিল একেবারেই মধুর। তবে সম্প্রতি নানা কারণে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাতের পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। বঙ্গের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজভবন সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বসাতে চেয়ে বিধানসভায় বিল পাশ হলেও তাতে সম্মতি মেলেনি রাজভবন তরফে।

rajbhavan

সম্প্রতি রবীন্দ্র জয়ন্তীতে জোড়াসাঁকোর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে বোস বলেন, তিনি শেক্সপিয়রের ‘হ্যামলেট’-এর মতো চুপ করে বসে থাকবেন না। এই পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘তিনি চুপচাপ বসে থাকবেন না তো কি? সবার চাকরি খাবেন? শুনুন আমি রাজ্যপালকে শ্রদ্ধা করি। আপনি প্রশ্ন করলেন বলে আমি উত্তর দিচ্ছি। রাজ্যপালকে আমরা সম্মান দিই কারণ, ওর পদটা হল আচার্যের, সম্মাননীয় পদ।’’

সেই সময় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও কটাক্ষের সুরে বলেছিলেন, ‘আমাদের ভুলে গেলে চলবে না হ্যামলেট কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিষ্ক্রিয় থাকেনি। সক্রিয় হয়েছিল এবং তারপর তার কী দশা হয়েছিল সেটাও আমরা জানি। উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে বাইপাস করে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে কুক্ষিগত করার যে মানসিকতা দেখা যাচ্ছে , এটা হ্যামলেটিয় লাগছে না। বরং অনেকটা ম্যাকবেথের মতো লাগছে।’ এহেন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতেই এবার একেবারে রাজভবনের প্রাসঙ্গিকতা নিয়েই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর