বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বধূ নির্যাতনের ঘটনার প্রসঙ্গ প্রায়শই উঠে আসে খবরের শিরোনামে। কিন্তু, এবার রীতিমতো স্ত্রীদের অত্যাচারেই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন স্বামীরা। এমনকি, পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে গিয়েছে যে, এহেন “অত্যাচার”-এর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না শ্বশুরমশাইরাও। খোদ শহর কলকাতা (Kolkata)-তেই এহেন উদাহরণ মিলবে প্রচুর। যেখানে বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলেই এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা সকলেই দাবি করেছেন যে, আইনের অধিকার সমান হোক মহিলা ও পুরুষদের জন্য। পাশাপাশি, তাঁরা আরও জানিয়েছেন আইন যে রকম মহিলাদের জন্য কার্যকর হয়, ঠিক তেমনই পুরুষদের কথাও সেখানে গুরুত্ব সহকারে শোনা হোক এবং তার ভিত্তিতে যথোপযুক্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হোক। এছাড়াও বলা হচ্ছে যে, বেশ কিছু মহিলা ৪৯৮ ও ৪৯৮ (এ), এই দু’টি ধারার রীতিমতো অপব্যবহার করছেন।
যেমন ধরুন, হরিদেবপুরের বাসিন্দা তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ৮০ বছর বয়সী মণীন্দ্র চন্দ্র ঘোষের কথা। তাঁর স্ত্রী গত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর ছেলে ও বউমা তাঁকে ক্রমাগত চাপ দিতে থাকেন যে, তাদের নামে বাড়ি, সম্পত্তি, টাকা-পয়সা, সমস্ত কিছু লিখে দিতে হবে। এমনকি, মণীন্দ্র বাবু অভিযোগ করেছেন যে, করোনার সময় হাসপাতালে ভর্তি করে সমস্ত সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়েছিল ছেলে।
এদিকে, হাসপাতাল থেকে ফিরে তিনি দেখেন, ব্যাঙ্কের টাকা-পয়সা থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু কেড়ে নিয়েছে ছেলে-বউমা। এমন পরিস্থিতিতে অসহায় মণীন্দ্রবাবুর সেই টাকা ফেরত চেয়েছিলেন এবং ছেলে-বউমাকে বাড়ি লিখে দেবেন না বলাতে, তাঁর বিরুদ্ধে বউমা দু’টি বধূ নির্যাতনের মামলা করে দেয়। যার ফলে, এই বৃদ্ধকে দু’বার আদালতে গিয়ে জামিন নিতে হয়েছে।
তবে, শুধু যে বয়স্করাই “টার্গেট” হচ্ছেন তা কিন্তু নয়। বরং, এই ধরণের পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন বিভিন্নজন। ২০১৬ নাগাদ পাত্র-পাত্রীর বিজ্ঞাপন দেখে বিয়ে করেছিলেন বেহালার বিশ্বনাথ ধর। এদিকে, তিনি অভিযোগ করেছেন যে, বিয়ের রাত থেকেই একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হন তিনি। প্রথম রাতেই তাঁর স্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে একসাথে থাকতে পারবেন না। আর তখনই থেকেই মনোমালিন্যের সূত্রপাত। অথচ, বর্তমানে বিশ্বনাথকে প্রতি মাসে তাঁর স্ত্রীকে ১৩,০০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে খোরপোষ বাবদ।
ঠিক একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন দমদমের সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়। তিনি পেশায় একজন বিজ্ঞানী। এক কলেজ শিক্ষিকার সঙ্গে ২০১৬ সালে তাঁর বিবাহ সম্পন্ন হয়। এদিকে, তাঁর বৈবাহিক জীবন মাত্র ১১ মাসেই থমকে যায়। জানা গিয়েছে, বিয়ের পর থেকেই ওই কলেজ শিক্ষিকার দাবি ছিল, সন্দীপনকে ঘরজামাই হয়ে থাকতে হবে। পাশাপাশি, ২০১৭ সালে একটি সন্তানও হয় তাঁদের। তাঁর স্ত্রীর কাছেই রয়েছে সন্তানটি। এমন পরিস্থিতিতে ছেলের সমস্ত খরচ সন্দীপনবাবুকে বহন করতে হলেও তাঁর স্ত্রী আর বাড়িতে ফেরেননি।