বাংলাহান্ট ডেস্ক : বিরোধ এবং ফাটল যেন ক্রমশ আরও স্পষ্ট হচ্ছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। এবার দল নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করতে শোনা গেল খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে। বিজেপি বাংলার ক্ষমতায় আসার যোগ্যই নয়, এই দাবি করে ভোটের কৌশল তৃণমূলের কাছে শেখার পরামর্শই দিয়েছেন তিনি।
মেদিনীপুরে দলের এক সাংগঠনিক বৈঠকে রবিবার সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘আমরা কর্মীদের বলছি, কিছু বলার থাকলে উপরে বলবেন। আর আমরা নিজেরাই চায়ের দোকানে গিয়ে অন্যের সম্পর্কে বলছি। মানুষ অত বোকা নয়। মানুষ সব দেখে। আমরা ক্ষমতায় আসার যোগ্য হইনি। বিধানসভা ভোটের সময় আমরা দুশোর স্বপ্ন নিয়ে এগোলাম। সরকার গড়ছি, সরকার গড়ছি, এমন একটা হাইপে চলে গেলাম। লোককে স্বপ্ন দেখানোর কথা ছিল। উল্টে নিজেরাই স্বপ্ন দেখে সেই স্বপ্নের মধ্যে নাচতে শুরু করলাম। তার পর যা হয়, বেশি স্বপ্ন দেখলে। ধপাস করে নীচে পড়লাম।’
এখানেই শেষ নয়, দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়েও এদিন সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। আর তা করতে গিয়েই তৃণমূলের তুলনা টেনে শাসকদলের থেকে বিজেপিকে ভোট কৌশল শেখার পরামর্শ দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘তৃণমূলকে দেখুন। গোটা বছর নিজেরা মারামারি করছে। কিন্তু যখন ভোট আসে, সব চোর একসঙ্গে হয়ে যায়। কারণ ওরা জানে, ভোটটা যদি জিততে না পারে তা হলে আর তোলাটা তুলতে পারবে না। আর আমরা করছি উল্টোটা। গোটা বছর সবার সঙ্গে হাত ধরে ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলতে বলতে যাচ্ছি। আর ভোটের সময়ে যেই প্রার্থী ঘোষণা হয়ে গেল, শুরু হয়ে গেল কেমন করে তাঁকে হারানো যায়, সেটা ভাবা। এ ভাবে ভোটে জেতা যায় না।’
উল্লেখ্য, সুকান্ত মজুমদারের একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি । এহেন পরিস্থিতির মধ্যে দিলীপ ঘোষকেও একহাত নিতে ছাড়েননি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘আমি আড়াই বছর সাংসদ পদের দায়িত্ব সামলানোর পর রাজ্য সভাপতি হয়েছি। উনি কয়েকমাসে হয়েছিলেন।’
বিগত কিছুদিন ধরেই ক্রমাগত সামনে আসছে বিজেপির অন্দর মহলের কোন্দলের ছবি। দলের বিরুদ্ধেই সোচ্চার হচ্ছেন একের পর এক নেতা নেত্রী। দল ছেড়েছেনও বহু। এরই মধ্যে দলের সংগঠন প্রসঙ্গে ঘোরতর সব অভিযোগ এনে সোচ্চার হয়েছেন সৌমিত্র খাঁ, অনুপম হাজরার মতন নেতারা। গতকালই দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করেছেন বিধায়ক অশোক দিন্দা। তারই মধ্যে রাজ্য সভাপতির এহেন মন্তব্য যে চূড়ান্ত শিলমোহর দিল অন্তর্কলহের জল্পনায় এবার তা বলাই বাহুল্য।