বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিহাস ঘাটলে কোচবিহারের রাজবাড়ি খুব বেশি পুরনো নয়। এমনকি পর্যটকদের অন্যতম ভ্রমণ স্থান এই রাজবাড়ি (Rajbari)। তবে,কোচবিহারের রাজবাড়িতে (Cooch Behar Rajbari) ভিজিটারদের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দিন দিন জরাজীর্ণ হয়ে পড়ছে ঐতিহাসিক কোচবিহারের রাজবাড়ি। অর্থ আদায় কোটি কোটি টাকা পৌঁছালেও পর্যাপ্ত কর্মচারীর ও রক্ষণাবেক্ষণ এর অভাবে রাজবাড়ীর মান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে। এই তথ্য জানার অধিকার আইনে প্রাপ্ত একাধিক সরকারি তথ্য (RTI) থেকে উঠে এসেছে।
কেমন আছে পর্যটকদের আকর্ষণের আমেঘ চুম্বন ঐতিহাসিক কোচবিহারের রাজবাড়ি (Cooch Behar Rajbari)
ইতিহাসের বিচারে কোচবিহারের রাজবাড়ি খুব বেশি পুরনো নয়। বয়স মোটামুটি ১৩৫ বছর। কিন্তু এর ঐতিহ্য অপরিসীম। এমনকি, কোচবিহারের এই প্রাসাদ ভিক্টোরিয়ান জুবিলি প্যালেস বা রাজবাড়ি নামে পরিচিত। এমনকি, কোচবিহারের (Cooch Behar) সবথেকে আইকনিক ও বিখ্যাত স্থান এই রাজবাড়ি।
১৮৮৭ সালে লন্ডনের বাকিংহোম প্যালেসের অনুকরণে তৈরি করা হয় এটি। এমনকি এটিকে শহরের হেরিটেজ হিসাবে ও চিহ্নিত করা হয়। সূত্রের খবর, কলকাতার বাসিন্দা (Kolkata) গবেষণানুরাগী সাবির আহমেদ রায়গঞ্জ আর্কিওলজিক্যাল সার্কেলের অধীনে কোচবিহার রাজবাড়ির (Cooch Behar Rajbari) গত তিন বছরে টিকিট বিক্রি করে আয়, ভিজিটরের সংখ্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়ে আরটিআই করেছিলেন। সেই উত্তরে উঠে আসে, ২০২১-’২২ সালে ভিজিটরের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৭৪ হাজার ৫৬ জন, অর্থ আদায় হয়েছে ৪৩ লক্ষ ৫২ হাজার ৭৭৫ টাকা। অন্যদিকে, ২০২২-’২৩ সালে ভিজিটর বেড়ে দাঁড়ায় ৬ লক্ষ ৮০৩ জন এবং আয় হয় ১ কোটি ৫০ লক্ষ ৪০ হাজার ৪২৫ টাকা। ২০২৩-’২৪ অর্থ বছরে আরও বৃদ্ধি পেয়ে ভিজিটরের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬ লক্ষ ৭৭ হাজার ৬৫ জন এবং টিকিট বিক্রি ছিল ১ কোটি ৬৯ লক্ষ ৬১ হাজার ৮২৫ টাকা। কিন্তু আয় বৃদ্ধির তুলনায় রক্ষণাবেক্ষণে বরাদ্দের চিত্র অত্যন্ত হতাশাজনক। ২০২১-’২২ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৩৬ লক্ষ ১০ হাজার, ২০২২-’২৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় ২৮ লক্ষ ১ হাজার এবং ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৩১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। অর্থাৎ, আয় যেখানে তিন বছরে চারগুণ বেড়েছে, বরাদ্দ কার্যত নামমাত্র।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ভরা মৌসুমেও দেখা নেই ইলিশের, বাড়ছে দাম, কলকাতায় আসবে পদ্মার ইলিশ?
এই তথ্য জানার পর, পশ্চিমবঙ্গ সংগ্ৰহালয় সমিতির সদস্য তথা কোচবিহার আর্কাইভের (Cooch Behar Archive) সভাপতি ঋষি গল্প পাল জানান, উত্তর-পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় সংগ্রহশালায় পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কোচবিহার রাজবাড়ির (Cooch Behar Rajbari)। অথচ বহু ঘর এখনও বন্ধ, পুরনো নিদর্শন খসে পড়ছে। রক্ষণাবেক্ষণের যথাযথ উদ্যোগ নেই, কর্মচারীর সংখ্যাও অত্যন্ত কম। এমনকি, কোচবিহারের সাংসদ তৃণমূল কংগ্রেসের জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বলেন, কেন্দ্র দেশের ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলির রক্ষণাবেক্ষণে নজর দিচ্ছে না। কোচবিহার রাজবাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা আয় হলেও অস্থায়ী কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার ডিরেক্টরের সঙ্গে কথা বলব।