বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। তার ওপর কিছুদিন থেকে এই ইস্যুতে জুড়েছে বামেদের চিরকুট প্রসঙ্গ। সিপিএম (CPM) জামানায় হাজার হাজার চাকরি চিরকুট সুপারিশে হয়েছে, এমনটাই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। তবে এই বিষয়ে কিছু জানেননা বলেই প্রথম থেকে মন্তব্য করে আসছেন বাম নেতা বিমান বসু।
অন্যদিকে, দুদিন থেকে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakraborty) স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীর চাকরিকে ইস্যু করে ময়দানে নেমেছে শাসকদল। তাদের দাবি সুপারিশের মাধ্যমেই চাকরি হয়েছিল মিলিদেবীর। সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর চাকরি নিয়ে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিমান বসু বলেছিলেন বাম আমলে চিরকুটে চাকরি হত না। এইসব নিয়েই যখন জোর রাজনৈতিক তরজা ঠিক সেইসময় সুজনবাবুর বিরুদ্ধে ‘চিরকুটে চাকরি’ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে। ২০০৭ সালের দুটি ‘চিরকুট’ নিয়েই এখন শোরগোল রাজ্য-রাজনীতি। তবে ইতিমধ্যেই সুপারিশের বিষয় পরোক্ষ ভাবে স্বীকার করে নিয়েছেন সুজন চক্রবর্তী।
সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই চিরকুট গুলিতে দেখা যাচ্ছে, তদানীন্তন সিপিএম সাংসদ সুজন চক্রবর্তী সাংসদের লেটার হেড ব্যবহার করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের পার্টি পরিবারের এক সদস্যকে চাকরি ‘করে দিতে হবে’ বলে চিরকুট পাঠিয়েছেন। যার মধ্যে একটি চিরকুট পাঠানো হয়েছিল তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীকে। অন্যটি, সুভাষবাবুর সে সময়কার কনফিডেন্সিয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট (সিএ) নিখিল পালকে। যদিও এই দুই চিরকুটের সত্যতা যাচাই করেনি বাংলা হান্ট টিম।
রাজ্যের পরিবহণ দপ্তরে চাকরি করে দেওয়ার জন্য সুপারিশ করে ০৫.০৫.০৭ প্রথম চিরকুট সুভাষ চক্রবর্তীকে প্রেরণ করেন তিনি। সুজনবাবু লেখেন, “কমরেড সুভাষ চক্রবর্তী, আশাকরি ভালো আছেন। পত্রবাহককে পাঠালাম। ভালো ছেলে। মগরাহাটের পার্টি পরিবারের সদস্য। পুল কারের জন্য। ইন্টারভিউতে পাশ করেছে। যদি দেখে নেন ভালো হয়। খুবই ভালো ছেলে।’ যেই বয়ানের নীচে তারিখ সহ সুজনবাবুর নিজের সইও রয়েছে।
অন্যদিকে, দ্বিতীয় চিরকুট সিএ নিখিল পালকে প্রেরণ করে সুজনবাবু লেখেন, ‘কমরেড নিখিল/ সিএ টু সুভাষ চক্রবর্তী, কথামতো পত্রবাহক কমরেডকে পাঠালাম। প্র্যাটিকাল টেস্টে পাশ করেছে। করে দিতে হবে।’ সেখানেও সুজনবাবুর সই সহ তারিখ ০৫.০৫.০৭ এর উল্লেখ রয়েছে।
এই আবহেই ভাইরাল হওয়া এই চিরকুট গুলি নিয়ে মুখ খোলেন সুজনবাবু। এই বিষয়ে এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, “এতদিন প্রশ্ন উঠছিল চাকরি বিক্রি, চাকরি চুরি, টাকার খেলার। সেখান থেকে চলতে-চলতে চলে গেল সুপারিশে। এই সুপারিশ সারা দুনিয়ায়, সারা জন্মে ছিল। আর এই চিঠিতে স্পষ্ট লেখা ওই ব্যক্তি প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষায় পাশ করেছেন। দেখতে ভালমন্দ বলে কেউ যেন কেটে-কুটে না দেয়। এটা তো চিরকাল বলা হয়। ভবিষ্যতেও বলা হয়েছে। আমি জানি না চাকরি চুরি থেকে চাকরি বিক্রি বলতে গিয়ে কেউ-কেউ বোকা-বোকা জায়গায় কেউ হাজির হচ্ছেন।”