বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: সালমান খান তার গ্রাউন্ডসম্যান হিসাবে কর্মরত বাবার সাথে মুম্বাইয়ের ক্রস ময়দানে একটি ছোট তাঁবুতে থাকতেন। ওই তাঁবুটিকেই ওখানে ম্যাচের দিনে খেলোয়াড়দের ড্রেসিং রুম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আজ ২২ বছর বয়সী এই তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটার মুম্বাইয়ের ফাইভ স্টার হোটেল “ট্রিটেন্ডে” অবস্থান করছেন এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং রবীন্দ্র জাদেজার মতো খেলোয়াড়দের সাথে ড্রেসিংরুম ভাগ করছেন।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে সালমান খান চেন্নাই সুপার কিংসের নেট বোলার হয়ে ওঠার গল্প বলেছেন। সালমান বলেছেন “একদিন আমি চেন্নাই সুপার কিংসের একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে ফোন পেয়েছি। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে আমি এই মরশুমে তাদের নেট বোলার হিসাবে দলে যোগ দিতে রাজি কিনা। পরে, আমি জানতে পারি যে মুম্বাইয়ের একজন খেলোয়াড় তুষার দেশপান্ডে আমার নাম সুপারিশ করেছিলেন। আমি এই সুযোগটি পেতে অত্যন্ত আগ্রহী ছিলাম কারণ আমি এখানে অনেক কিছু শেখার সুযোগ পেতাম, যা ক্লাব ক্রিকেট খেলার সময় আমার কাজে লাগতো। চেন্নাই সুপার কিংস গত কয়েক বছরে নেট বোলার থেকে আইপিএলের ভবিষ্যত তারকা তৈরির বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটিয়েছে। এই মরশুমে মুকেশ চৌধুরী এবং প্রশান্ত সোলাঙ্কি খেলা হলো এমন বোলারের উদাহরণ। এবারের মেগা নিলামের আগে গত মরশুম পর্যন্ত দুই ক্রিকেটারই সিএসকে-র নেট বোলার ছিলেন।
সালমান এখনও অবধি মুম্বাইয়ের হয়ে জুনিয়র এবং অনূর্ধ্ব-২৩ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলেছেন, তিনিও আশাবাদী যে ঠিক রাস্তায় পরিশ্রম করলে তার সাথেও এমনটা ঘটতে পারে। তিনি বলেন, তার বাবা তাকে এখনও যখনই ফোন করেন, বলেন ভালো কর, তাহলে তিনি ভালো থাকবেন, তার পরিবারও ভালো থাকবে। সালমান তাকে ভরসা জুগিয়ে বলেছেন যে তিনি তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। সালমান আরও বলেন, “এই দুই মাস আমার জীবন বদলে দিতে পারে। মাহি ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম আমার বোলিং সম্পর্কে। তিনি বলেন, ‘সালমান, টি-টোয়েন্টিতে সবাই অফ-স্পিনারকে বড় শট মারার চেষ্টা করে, তাই বোলিং করার সময় নিজের মনের জোরের পূর্ণ ব্যবহার করতে হবে।’ প্রত্যেক খেলোয়াড়ের সাথে সমান আচরণ করা হয় সিএসকে শিবিরে, দলের পরিবেশ দারুণ।”
একইসঙ্গে, সালমানের বাবা ইরদিস, যিনি তার পুরো জীবন ক্রস ফিল্ডে কাটিয়েছেন, তিনিও ছেলের এই অগ্রগতিতে খুশি। গ্রাউন্ডসম্যান হিসাবে তার চার দশকে, তিনি কাছ থেকে দেখেছেন সচিন টেন্ডুলকার এবং জাহির খানের মতো তারকা ক্রিকেটারদের। ছেলে সালমান সম্পর্কে ইদ্রিস বলেন,”ওর জন্য আমি খুবই খুশি। আমি একজন ছোট্ট মানুষ। আমি শুধু চাই ও জীবনে ভালো করুক। গ্রাউন্ডসম্যান হিসেবে ৪০ বছরে মানুষকে শূন্য থেকে তারকা হতে দেখেছি, আমি চাই আমার ছেলে ভালো ক্রিকেট খেলুক এবং নিজের পায়ে দাঁড়াক।” সালমান নিশ্চয়ই আশা করছেন যে সঠিক পরিশ্রম করলে অন্যান্য নেট বোলারদের মতো তার জীবনও এখান থেকে বদলে যাবে।