বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: একসময় বিভিন্ন ছোটখাট লোকাল টুর্নামেন্টে ছেলে খেপ খেলে বেড়াতো। ভালো পারফরম্যান্স করলে জুটতো সামান্য কিছু পারিশ্রমিক। সেই সুবাদে বাড়ির লোকজনদের মুখে ফুটতো হাসি। বাবা অটো চালক হলেও প্রবল পরিশ্রম করে ছেলের এই ভালোলাগাটা বজায় রেখেছিলেন। ছেলের যাতে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ বন্ধ না হয় সেই জন্য অতিরিক্ত পরিশ্রম করে রোজগার করে আনতেন।
এহেন মহম্মদ সিরাজ যখন প্রথমবার সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সুযোগ পেলেন তখন দেখা গেল তার ইকোনমি ডেট বড্ড ওপরের দিকে। নিয়মিত উইকেট পেতেন এমনটা নয়। এরপর আইপিএলের সুযোগ পেয়ে সেখানেও প্রাথমিকভাবে ব্যর্থ। কিন্তু তার ওপর ভরসা রেখেছিলেন বিরাট কোহলি। খারাপ পারফরম্যান্স করা সত্ত্বেও সুযোগ দিয়ে গিয়েছিলেন। সেই ভরসার মান এখন রাখতে পেরেছেন সিরাজ।
যদিও রাস্তাটা এতটা সহজ ছিল না। দু বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় নিজের প্রথম টেস্ট খেলার সময় বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েছিলেন। কিন্তু বায়ো বাবলের করা সুরক্ষার কারণে তিনি মাঝপথে ফিরতে পারেননি করনা আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে। তারপর থেকেই যেন ক্রমাগত তার কেরিয়ারের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। ক্রমে ক্রমে নিজেকে ভারতীয় পেস বোলিংয়ের প্রধান মুখ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে ফেলছেন তিনি।
গতবছর থেকে ওডিআই দলে নিয়মিত সুযোগ পেয়েছিলেন দলের মূল অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ওই ফরম্যাটের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকায়। সেখান থেকে বুমরার অনুপস্থিতিতে ভারতীয় দলকে নতুন বল হাতে প্রবল ভরসা দিচ্ছেন মহম্মদ সিরাজ। উইকেট তোলার পাশাপাশি কৃপণ বোলিংও করে চলেছেন প্রতিদিন। গতকাল নিজের ঘরের মাঠে সেই পারফরম্যান্সই অব্যাহত রেখেছিলেন।
গতকাল বল হাতে দুটি মেডেন ওভার দেওয়ার পাশাপাশি নতুন বল হাতে, মাঝের ওভারে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ডেথ ওভার মিলিয়ে মোট ৪ টি উইকেট তুলেছেন সিরাজ। আজ ঘরের মাঠে তার প্রথম ওডিআই ম্যাচের বোলিং দেখতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়েছিলেন গোটা পরিবার। কিন্তু সেখানে ছিলেন না তার পিতা মহম্মদ গাউস। নিজের পরলোকগত পিতা ও বাকি পরিবারকে আর হতাশ করেননি মহম্মদ সিরাজ। গত এক বছর ধরেই তিনি ওডিআই ফরম্যাটে অসাধারণ ফর্মে রয়েছেন। নতুন বল হাতে গত এক বছরে এই ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি উইকেট সংগ্রহ করেছেন তিনি। বাবার মৃত্যু যেন আরো অনেক বেশি জেদি ও উদ্যমী করে তুলেছে সিরাজকে।