বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আগামীকাল মে মাসের 2 তারিখ। ঠিক এই দিনটিতেই 11 বছর পূর্বে তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি প্রথমবারের জন্য বাংলার বুকে সরকার গঠন করে। শুধু তাই নয়, গতবছর ঠিক আগামীকালই বিপুল সংখ্যক ভোটে জিতে পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় আসে তারা। তবে এর ঠিক একদিন আগে আজ রবিবার দলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। রাজনীতি ময়দানের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিরোধীদের একের পর এক আক্রমণ করতে দেখা যায় দেবাংশুকে, কিন্তু এবার নিজের দলের বিরুদ্ধেই বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন তৃণমূল নেতা।
এদিন একটি ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করেন দেবাংশু যেখানে তিনি লেখেন, “আগের বছর ঠিক আজকের দিন পর্যন্ত বাংলায় তৃণমূল দল ছিল নিষ্কলুষ। ধান্দাবাজহীন, অকৃত্রিম এবং প্রকৃত তৃণমূল। তারপর তো বন্যা এল! গঙ্গার জল, ড্রেনের জল সব মিলেমিশে একাকার। তবুও দলে একটা স্ট্রং ফিল্টার আছে বলেই বিশ্বাস। তারা পিছনের সারিতে থাকবে, সেটাও বিশ্বাস করে দলের কর্মীরা।”
মুহুর্তের মধ্যেই তাঁর এই ফেসবুক পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায় এবং চারিদিকে বিতর্ক শুরু হতে থাকে। প্রসঙ্গত, বিরোধীরা অতীতে একাধিকবার দাবি করতে থাকে যে, বিধানসভা নির্বাচনে ফল ঘোষণার পর থেকেই যেভাবে বিজেপি এবং অন্যান্য বিরোধী দল থেকে তৃণমূলে নেতারা যোগদান করে চলেছেন, তাতে তৃণমূলের প্রকৃত নেতা বলে আর কেউই নেই! তবে এতদিন পর্যন্ত শাসকদল দ্বারা সেসকল মন্তব্যকে পাত্তা দিতে দেখা জাইনি কিন্তু এদিন দেবাংশুর এই পোস্টটি একপ্রকার ঘুরিয়ে বিরোধীদের মন্তব্যকেই যেন সমর্থন করলো।
এদিন তৃণমূল নেতা বলেন, “গতবছর 2 রা মে বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণা করা হয়। ফলে এটা স্বীকার করতেই হবে যে, 1 মে পর্যন্ত যারা তৃণমূল দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অর্থাৎ যে সকল দলীয় কর্মী এবং নেতারা দলের হয়ে যুদ্ধ করে গেছেন, তারাই হলেন দলের প্রকৃত সম্পদ। তবে দল ক্ষমতায় আসার পর অনেকেই অন্য দল থেকে আমাদের দলে এসে যোগদান করেছেন। বর্তমানে তৃণমূলে একটি স্ট্রং ফিল্টার রয়েছে। সে ক্ষেত্রে অতীতে যেসকল কর্মীরা যেখানে ছিলেন, তারা সেখানেই থাকবেন বলে আমার বিশ্বাস। এদের ওপরই নির্ভর করে টিকে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।”
দেবাংশু ভট্টাচার্যের ফেসবুক পোস্টটি ভাইরাল হওয়ার পরই সরগরম হয়ে ওঠে রাজনীতি। ফলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে দেখেই মুহূর্তের মধ্যে তা ডিলিট করে দেন দেবাংশু। তার পরিবর্তে একটি নতুন পোস্ট করেন তৃণমূল নেতা যেখানে তিনি সাফাই দিয়ে লেখেন, “শেষ পোষ্টের অর্থ হয়ত ঠিকঠাক বোঝাতে পারিনি। অকারণ বিতর্ক হচ্ছে। তাই পোস্ট ডিলিট করলাম। কর্মীরাই দলের সম্পদ। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। দলের সিদ্ধান্তের উপর ভরসা রাখতে হবে। এই দলে কর্মীদের স্বার্থ সবার আগে দেখা হয়। কারণ, এই দলের নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”