‘মিড ডে মিলের চাল চুরি করছে তৃণমূল’! রিপোর্ট চাইল কেন্দ্র, বিরাট পদক্ষেপ শুভেন্দুর

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মিড ডে মিল (Mid Day Meal) নিয়ে রাজনৈতিক তরজা! তৃণমূলের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ এনেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) আবার দাবি, মিড ডে মিল প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া টাকার মধ্যে এখনও ৪০০০ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। রাজ্য সেই অর্থ খরচই করেনি। পাল্টা বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে সরব হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)।

‘মিড ডে মিলের চাল চুরি করছে তৃণমূল’! বিস্ফোরক শুভেন্দু- (Mid Day Meal)

মিড ডে মিল নিয়ে কেন্দ্রের একটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মিড ডে মিলের জন্য ১ কোটি ১৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ১৪৬ জন পড়ুয়া নথিভুক্ত ছিল। এর মধ্যে ৭৭ লক্ষ ৯১ হাজার ৯৪৬ জন মিড ডে মিল পেয়েছে। শতাংশের নিরিখে দেখা হলে ৬৯% পড়ুয়া পেয়েছে। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর ২৪ পরগণা সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় সেই সংখ্যা আরও কম।

এখানেই শেষ নয়! ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে মিড ডে মিলে নথিভুক্ত পড়ুয়ার সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে। আগের বছর যেখানে প্রায় ১ কোটি ১৪ লক্ষ পড়ুয়া ছিল, সেখানে এই বছর সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৮০ লক্ষের কিছু বেশি। মিড ডে মিলের ক্ষেত্রে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ কেন হ্রাস পাচ্ছে? ইতিমধ্যেই এই নিয়ে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে কেন্দ্র। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে সেই রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ‘৪০% তৃণমূলের দেওয়া চাকরি পেয়েছে’! ফের বেলাগাম মদন, অস্বস্তি বাড়ল শাসকদলের?

সরকার পরিচালিত, সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়গুলির পড়ুয়াদের মিড ডে মিল (Mid Day Meal) দেওয়া হয়। অষ্টম শ্রেণি অবধি ছাত্রছাত্রীরা এই প্রকল্পের সুবিধা পান। এদিকে গত শিক্ষাবর্ষে ৩১% ছাত্রছাত্রীর মিড ডে না পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বালুরঘাটের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।

BJP MP Sukanta Majumdar asked party workers to take oath

বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘৫০% শিশু মিড ডে মিল খাচ্ছে না। এই প্রকল্পে কেন্দ্র যে টাকা দেয়, সেটার মধ্যে ৪০০০ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। রাজ্য খরচই করেনি। সেই অর্থ কোথায় যাচ্ছে, কী হচ্ছে আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না’। তৃণমূলের লোকেদের বিরুদ্ধে মিড ডে মিলের চাল চুরি করার অভিযোগ এনেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু।

নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকেও কাগজের কাটিং সহ আমার বক্তব্য পাঠিয়েছি। মিড ডে মিলের চাল চুরি করছে তৃণমূলের লোকেরা। ১০০% দেখিয়ে চাল নিচ্ছে। এদিকে ৫০% রান্না হচ্ছে’।

Suvendu Adhikari went to the protest.

বিজেপির এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে দেশের বাকি বড় রাজ্যগুলির নিরিখে পশ্চিমবঙ্গে মিড ডে মিলের অবস্থা যথেষ্ট ভালো। ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম এনট্রি অনুসারে রাজ্যে মিড ডে মিলের কভারেজ ৬৯% শতাংশ। গুজরাট, বিহার, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশে সেটা অনেকটাই কম বলে দাবি করেন ব্রাত্য।

শুভেন্দুর অভিযোগের পাল্টা দিয়েছেন তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতা অরূপ চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, ‘মিড ডে মিল প্রকল্পে ভারতের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সেরা কাজ করেছে বলে লিখিতভাবে জানিয়েছে কেন্দ্র। শুভেন্দু অধিকারীর গাত্রদাহ হচ্ছে’।

 Mid Day Meal

অরূপ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দিক নির্দেশনায় বাংলার ছাত্রছাত্রীরা মিড ডে মিল প্রকল্পে সপ্তাহে একদিন করে মাংস পাচ্ছে। একদিন মরশুমি ফল দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যে মিড ডে মিলের খাবারের মান এতটাই উন্নত যে কেন্দ্রীয় সরকার এসে শংসাপত্র দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, সরকারের মিড ডে মিল প্রকল্পের (Mid Day Meal) মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে এদেশের বহু পড়ুয়া। সরকার পরিচালিত, সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়গুলির অষ্টম শ্রেণি অবধি ছাত্রছাত্রীদের এই স্কিমের অধীন এক বেলার খাবার দেওয়া হয়। এবার সেই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। আগামীদিনে এই ইস্যু কোনদিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার।

Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।