বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি কাণ্ডে গতকাল আদালতের নির্দেশে ফের একবার ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)। আদালত থেকে বেরোনোর মুহূর্তে তিনি ‘দলের সঙ্গে আছি। একশো বার আছি’ মন্তব্য করেন। যদিও এদিন তাঁর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা কটাক্ষ করলেন বিজেপির (Bharatiya Janata Party) সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। দিলীপবাবুর দাবি, “উনি দলের সঙ্গে আছি বললেও দল পার্থর সাথে নেই।” পরবর্তীতে তৃণমূল কংগ্রেসকে উদ্দেশ্য করেও একের পর এক কটাক্ষ করেন বিজেপি নেতা।
উল্লেখ্য, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় সম্প্রতি ইডির হাতে গ্রেফতার হন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরবর্তীতে আদালতে একাধিকবার জামিনের আবেদন করা হলেও নিরাশ হয়েই ফিরতে হয়েছে তাঁকে। বিগত বেশ খানিকটা সময় ধরে আদালতের নিকট ভার্চুয়াল ভাবেই উপস্থিত করা হতো পার্থকে। তবে সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে গতকাল আলিপুর আদালতে পৌঁছে যান প্রাক্তন তৃণমূল নেতা। যদিও আদালতের নির্দেশে ফের একবার প্রেসিডেন্সি জেলেই ফিরে যেতে হয় পার্থকে।
গতকাল আলিপুর আদালতে প্রবেশ করার সময় সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্ন উড়ে আসে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে। পরবর্তীতে মেজাজ বিগড়ান প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী এবং সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আঙুল উঁচিয়ে চুপ থাকার নির্দেশও দেন তিনি। এক্ষেত্রে আদালতে প্রবেশের সময় মেজাজ বিগড়ালেও বেরোনোর সময় শান্ত থাকতেই দেখা যায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে। একইসঙ্গে তিনি বলেন, “দলের সঙ্গে আছি। ১০০ বার আছি।”
এই প্রসঙ্গে এদিন অবশেষে মুখ খোলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “পার্থ দলের সঙ্গে আছি বললেও দল কিন্তু ওর সাথে নেই। মুখ্যমন্ত্রী পার্থের সাথে নেই। কারণ, উনি টাকা পয়সার ভাগ দেন নি কাউকে। এখন এসব কথা বলে কোন লাভ হবে না।” দিলীপবাবু আরো বলেন, “অনুব্রত মণ্ডল কিংবা মানিক ভট্টাচার্য দিয়ে তবে খেয়েছে। তাই দল ওদের সঙ্গে রয়েছে। পার্থ টাকার ভাগ দেয়নি বলে ওকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গতকাল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং শান্তি প্রসাদ সিনহাকেও ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে গতকাল আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, “যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে, তাদেরকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এখনো তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। আরও তদন্তের প্রয়োজন।”
পরবর্তীতে ছয় মাসের সময়সীমারও উল্লেখ করেন আইনজীবী। ফলে সব মিলিয়ে একদিকে পার্থকে জেল হেফাজতের নির্দেশ আর অপরদিকে দিলীপবাবুর কটাক্ষ ঘিরে ইতিমধ্যেই সরগরম হয়ে উঠেছে বঙ্গ রাজনীতি।